বর্তমান সময়ে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে মোবাইল ফোন। বড়দের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হাতেও এখন স্মার্টফোন দেখা যায়। প্রযুক্তির এই যুগে পড়াশোনার প্রয়োজনে মোবাইল ফোন যেমন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে, তেমনি এর অতিরিক্ত বা ভুল ব্যবহার শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ক্ষতির কারণও হতে পারে।
ছাত্রজীবনে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব
একটা সময় ছিল যখন পড়াশোনা মানেই ছিল শুধু বই-খাতা আর ক্লাসরুম। কিন্তু এখন যুগ পালটেছে। ইন্টারনেটের কল্যাণে এখন হাতের মুঠোয় পুরো পৃথিবী। শিক্ষার্থীদের জন্য মোবাইল ফোন এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং একটি প্রয়োজনিয় ডিভাইস। করোনা মহামারির সময় আমরা দেখেছি কীভাবে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে মোবাইল ফোন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত মোবাইলের দাম, ফিচার সম্পর্কে জানতে MobileDokan ভিজিট করুন।
তবে এর গুরুত্ব নির্ভর করে এটি কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপর। সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে মোবাইল ফোন একজন শিক্ষার্থীর মেধা বিকাশে দারুণ ভূমিকা রাখতে পারে। যেমন-
জুম বা গুগল মিটের মতো অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই ক্লাস করা সম্ভব। এতে সময় এবং যাতায়াত খরচ দুটোই বাঁচে। পড়ার কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে গুগল বা ইউটিউবে সার্চ দিয়ে সহজেই সমাধান পাওয়া যায়। উইকিপিডিয়া বা বিভিন্ন শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করা সহজ হয়। পরীক্ষার সময়সূচি, নোট আদান-প্রদান বা গ্রুপ স্টাডির জন্য সহপাঠী ও শিক্ষকদের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা যায়। বর্তমানে ভাষা শেখা, গণিত সমাধান বা সাধারণ জ্ঞানচর্চার জন্য অনেক ভালো ভালো অ্যাপ পাওয়া যায়। অনেক সময় সব বই কেনা সম্ভব হয় না। মোবাইলে পিডিএফ ডাউনলোড করে সহজেই পড়া যায়।
অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করার ফলে পড়ার টেবিলে মনোযোগ থাকে না। এতে পরীক্ষার ফলাফলে খারাপ প্রভাব পড়ে। ভিডিও গেম খেলা বা অকারণে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে শিক্ষার্থীরা দিনের অনেকটা সময় নষ্ট করে ফেলে। ফলে পড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায় না। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের ক্ষতি হয়। এছাড়া ঘাড়ে ব্যথা, মাথাব্যথা এবং ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। রাত জেগে মোবাইল ব্যবহারের ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। মোবাইলে আসক্ত শিক্ষার্থীরা পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে চায় না। তারা নিজেরা একলা থাকতে পছন্দ করে, যা তাদের মানসিকভাবে একঘেয়ে করে তোলে। পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর বা নোট দেখার নাম করে অনেকে মোবাইলের মাধ্যমে নকল করার চেষ্টা করে, যা তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটায়।
মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়
শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, মোবাইল ফোন একটি যন্ত্র মাত্র। স্মার্টফোনকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হবে, ফোনকে জীবনের সবকিছু ভাবা যাবে না। আসক্তি কমাতে হলে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে ফোন ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। অভিভাবকদেরও উচিত সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা। তারা যেন পড়াশোনার কাজের বাইরে অতিরিক্ত সময় ফোন ব্যবহার না করে, সেদিকে নজর দিতে হবে। অবসর সময়ে মোবাইল ব্যবহার না করে বই পড়া বা খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।