আন্তর্জাতিক

কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ থাইল্যান্ডের

থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে নতুন স্বাক্ষরিত একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। কয়েক সপ্তাহের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর মাত্র দুই দিন আগেই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। খবর বিবিসির।

থাই সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত রবিবার রাতে কম্বোডিয়া সীমান্ত থেকে ২৫০টিরও বেশি ড্রোন উড়তে দেখা গেছে।

গত শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। উভয় পক্ষই বর্তমান অবস্থানে সম্মুখ সমররেখা বজায় রাখতে, নতুন করে সেনা মোতায়েন না করতে এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী বেসামরিক নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব ফিরে আসার অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছিল। সংঘর্ষের কারণে সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। 

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতায় এবং দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েক দিনের আলোচনার পর এই চুক্তিটিকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে রয়্যাল থাই আর্মি জানায়, সীমান্তে কম্বোডিয়ার ড্রোন উড়ানোর এই পদক্ষেপ ‘উস্কানিমূলক এবং উত্তেজনা হ্রাসের ব্যবস্থার পরিপন্থি’। তাদের দাবি, এই আচরণ যুদ্ধবিরতির শর্তের সঙ্গে ‘অসংগতিপূর্ণ’।

থাইল্যান্ড আরো জানায়, এর ফলে গত জুলাই থেকে তাদের হেফাজতে থাকা ১৮ জন কম্বোডীয় সেনার মুক্তির বিষয়টি তারা এখন ‘পুনর্বিবেচনা করবে।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যদি ‘চুক্তি এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত থাকে’, তাহলে থাইল্যান্ড যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

কম্বোডিয়া এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ‘কষ্টার্জিত’ এই যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সংঘাতের ‘দ্রুত ও সুষ্ঠু সমাপ্তি’ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই এই অভিযোগটি সামনে এলো।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধ নতুন নয়, বরং এটি এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগের।

চলতি বছরের শুরুর দিকে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকার মন্দিরে একদল কম্বোডীয় নারী দেশাত্মবোধক গান গাওয়ার পর নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। গত মে মাসে এক সংঘর্ষে একজন কম্বোডীয় সেনা নিহত হন, যা দুই দেশের সম্পর্ককে গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে যায়।

গত জুলাই মাসে সীমান্তে টানা পাঁচ দিনের তীব্র লড়াইয়ে কয়েক ডজন সেনা ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। পরবর্তীতে একই মাসে কূটনৈতিক মধ্যস্থতায় দেশ দুটির মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয় এবং অক্টোবর মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীন ও আসিয়ান জোটের চাপে চুক্তিটি মালয়েশিয়ায় স্বাক্ষরিত হয়।  

তবে চলতি মাসের শুরুতে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে সেই চুক্তিটি ভেঙে পড়ে। সেই সময় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করেছিল।