জাতীয়

স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন খালেদা জিয়া

১৯৯১ সালের ৯ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। 

১৭ মার্চ, ১৯৯১ দ্য মর্নিং সান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার নিয়োগ নিয়ে মন্তব্য করে—

‘‘অবশেষে দীর্ঘ প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ৯ বছর ধরে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন খালেদা জিয়া। এ সংগ্রাম ছিল গণতন্ত্রের জন্য, বাকস্বাধীনতার জন্য, ভোটাধিকারের জন্য এবং সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার জন্য। এ সংগ্রামের চেতনা ছিল এমন একটি সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে ভিন্ন মতাদর্শ প্রকাশের সুযোগ থাকবে। ৯ বছর স্বতন্ত্র অবস্থানে থেকে সংগ্রামকালে সুযোগসন্ধানী সহকর্মীদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর নানা প্রলোভন থাকা সত্ত্বেও কিছুই তাকে তার অবস্থান থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি- অবৈধ শাসকের সঙ্গে তিনি আপস করেননি। খালেদা জিয়া ও তার দল খুব সাধারণ কিছু বিষয়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এগুলো হলো- জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, জাতির মর্যাদা, উন্নয়ন, ত্রুটিমুক্ত সরকার ও অর্থনীতির বেসরকারিকরণ। তার আবেদন ছিল অনন্যসাধারণ, যা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বিকশিত হয়েছে। যেখানেই তিনি গেছেন, হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়েছে।’’

দ্য মর্নিং সান-এ খালেদা জিয়ার অর্জন নিয়ে লেখা হয় ‘‘এসব অর্জন তার সুশ্রী মুখাবয়বের জন্য হয়নি, বরং তার বক্তব্য শোনার পর মানুষ তাকে তাদের পরিত্রাতা হিসেবে গণ্য করেছে। বিগত ১৯৮৭ সালে তার উত্তরবঙ্গ সফরকালে গ্রামের মহিলারা তার কথা শোনার জন্য লণ্ঠন নিয়ে সারা রাত অপেক্ষমাণ ছিলেন, যেন মনে হয় সাধারণ মানুষকে তিনি সম্মোহিত করেছিলেন। যথাসময়ে মানুষও তাকে প্রতিদান দেয়, বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে যা ছিল অনভিপ্রেত ঘটনা।’’

দ্য মর্নিং পোস্ট আরও মন্তব্য করে ‘‘ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও বিএনপি আবারও ফিরে আসতে পারে-এটি উত্তরাধিকার বা অতিকথনের বিষয় নয়, এটি ছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের দৃঢ়তা।’’ (সংক্ষেপিত)

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সংবিধানের ৫৮(৩) অনুচ্ছেদের অধীনে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন খালেদা জিয়া। 

তথ্যসূত্র:  বেগম খালেদা জিয়া জীবন ও সংগ্রাম, মাহফুজ উল্লাহ, পৃষ্ঠা নম্বর: ৪০২