বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক সংগঠন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ এক শোকবার্তায় বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন জাতীয় ঐক্য ও নির্ভরতার প্রতীক। তার আপসহীন নেতৃত্বের ফলে বিভিন্ন সময়ে দেশের সংকটময় পরিস্থিতির সফল উত্তরণ সম্ভব হয়েছে। তার ইন্তেকালে দেশ একজন অভিজ্ঞ, প্রজ্ঞাবান ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘমেয়াদি শূন্যতার সৃষ্টি করবে। গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার নিরলস সংগ্রাম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দিকনির্দেশনা হয়ে থাকবে।” তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব), হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) শাখা। সংগঠনটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত এক শোক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম নক্ষত্র বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি এক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী নেত্রীকে হারালো।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বেগম খালেদা জিয়া তিনবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে দেশের রাজনীতি, গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তার নেতৃত্বে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ, বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা সুসংহত হয়। অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিকাশ, নারী ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রসারে তার উদ্যোগ ছিল উল্লেখযোগ্য। একজন নারী নেত্রী হিসেবে তার সংগ্রামী জীবন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিমও বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সংকটময় সময়ে দেশকে পথ দেখিয়েছেন। তার ইন্তেকালে দেশ একজন অভিজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালো।”
খুবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান পৃথক শোকবার্তায় বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক সাহসী ও সংগ্রামী নেত্রী হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দৃঢ়তা ও গণতন্ত্রের বিকাশে আপসহীন নেতৃত্ব দেশের ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।
এছাড়াও, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্টসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ বেগম খালদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দেশ পরিচালনায় দৃঢ়তা, প্রজ্ঞা ও সাহসিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন। গণতন্ত্র, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার রক্ষায় তিনি আজীবন আপসহীন ভূমিকা পালন করেছেন। রাজনৈতিক প্রতিকূলতা ও নিপীড়নের মধ্যেও তিনি কখনো আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি; যা তাকে এক অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “একজন নারী নেত্রী হিসেবে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বাংলাদেশের মর্যাদা সমুন্নত রেখেছেন। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান এবং শক্তিশালী বিরোধী রাজনীতির ধারা গড়ে তোলায় তার অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পাস প্রতিনিধিরা]