সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা রংপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত জানাজার সঙ্গে সরাসরি অংশগ্রহণের অংশ হিসেবে রংপুরেও এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে রংপুর মহানগরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে গায়েবানা জানাজা আদায় করা হয়। জানাজায় ইমামতি করেন রংপুর নগরীর নজিরের হাট বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. হামিদুল ইসলাম।
স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে দেশ ও জাতির শান্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত হয়।
গায়েবানা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন- রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মজিদ আলী, জেলা ও মহানগর প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এসময় শোকাহত কণ্ঠে উপস্থিত বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, সংকটময় সময়ে আপোসহীন নেতৃত্বের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক অনন্য সাহসী কণ্ঠ। তার রাজনৈতিক জীবনের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা বেগম জিয়ার আদর্শ ও দেশপ্রেম ধারণ করে রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার দীপ্ত শপথ নেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।
জানাজা ও দোয়া মাহফিল ঘিরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ ও আশপাশের এলাকায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ‘দেশনেত্রী’, ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বেগম খালেদা জিয়া লিভার, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। উল্লেখ্য চলতি বছর ৭ জানুয়ারি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি ঘটে। তিনি দেশে ফিরে আসেন। তবে বয়স প্রতিকূল থাকায় এবং নানাবিধ রোগের জটিলতার কারণে তিনি প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন।
সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল, তিনি পূর্বের ন্যায় এবারও কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু চিকিৎসকদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চিরদিনের মতো না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।