নতুন বছরের আবহে যখন গোটা বিশ্ব উৎসবে মত্ত, তখন ক্রিকেট দুনিয়ায় নেমে এলো বিষাদের কালো ছায়া। অস্ট্রেলিয়ার ২০০৩ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক ডেমিয়েন মার্টিন বর্তমানে কোমায় আচ্ছন্ন হয়ে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার পর ৫৪ বছর বয়সী এই লিজেন্ডারি ব্যাটারের শারীরিক অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক।
অসুস্থতার নেপথ্যে ‘মেনিনজাইটিস’: অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ ডিসেম্বর হুট করেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন মার্টিন। পরীক্ষায় ধরা পড়ে তিনি মেনিনজাইটিসে (মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডের প্রদাহজনিত সংক্রমণ) আক্রান্ত। এই রোগের তীব্র মাথাব্যথা, জ্বর ও স্নায়বিক বিভ্রান্তি কাটিয়ে ওঠার আগেই তিনি কোমায় চলে যান। বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার জীবন বাঁচানোর আপ্রাণ লড়াই চলছে।
পাশে দাঁড়িয়েছেন সতীর্থ ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া: মার্টিনের এই দুঃসময়ে বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন তার দীর্ঘদিনের সতীর্থরা। কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক অ্যাডাম গিলক্রিস্ট জানিয়েছেন, তার পরিবার এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এক আবেগঘন বার্তায় ড্যারেন লেম্যান বলেছেন, “তুমি মাঠের লড়াকু যোদ্ধা, আমি নিশ্চিত জীবনের এই পিচেও তুমি জয়ী হবে।”
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বোর্ড সার্বক্ষণিকভাবে মার্টিনের পরিবারের পাশে রয়েছে এবং তার সুচিকিৎসায় কোনো ত্রুটি রাখা হবে না।
এক নজরে ডেমিয়েন মার্টিনের ক্যারিয়ার: অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের সোনালী যুগের অন্যতম কারিগর ছিলেন ডেমিয়েন মার্টিন। ১৯৯২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত তার রাজকীয় ব্যাটের জাদুতে মুগ্ধ হয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব।
বিশ্বকাপের নায়ক: ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে তার অপরাজিত ৮৮ রানের ইনিংসটি এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে লেগে আছে।
পরিসংখ্যান: ৬৭টি টেস্টে ৪৪০৬ রান এবং ২০৮টি ওয়ানডে ম্যাচে ৫৩৪৬ রান করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে ১৮টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি রয়েছে তার ঝুলিতে।
অবসর পরবর্তী: ২০০৬ সালে ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার পর দীর্ঘ সময় ধারাভাষ্যকার হিসেবে মাইক্রোফোন হাতে মাঠ মাতিয়েছেন তিনি।