অর্থনীতি

১৫ বছরের কর অবকাশ সুবিধা পেল ওরিয়ন

এম এ রহমান : গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী (মেয়র মোহাম্মদ হানিফ) ফ্লাইওভারের ১৫ বছরের আয়ের ওপর কর অবকাশ সুবিধা পেল ওরিয়ান গ্রুপ।

 

বিদ্যুৎ খাতের ন্যায় ওরিয়ন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই কর সুবিধা পাবে।

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান গোলাম হোসেনের সভাপতিত্বে রোববার অনুষ্ঠিত এক বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এনবিআরের একটি সূত্র রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

 

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বিল্ড ওন অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার (বিওওটি) পদ্ধতিতে নির্মিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে ১৫ বছরের কর অবকাশের প্রস্তাব দেয় ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। যদিও চুক্তিতে এ ধরনের কোনো বিষয় ছিল না।

 

তারপরও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ বোর্ডের বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যুৎ খাতের মতো এ সুবিধা চায়। শেষ পর্যন্ত তারা এনবিআরের কাছ থেকে ওই সুবিধা আদায় করে নিল।

 

ফ্লাইওভার নির্মাণে ২০০৫ সালে তৎকালীন ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) সঙ্গে চুক্তি সই করে বেলহাসা-একম অ্যাসোসিয়েটস। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে বিনিয়োগ আকর্ষণে সে সময় ১০ বছরের জন্য আয়করের ওপর ৩০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়। আর এখন এই সুবিধা বাড়িয়ে ১৫ বছরের জন্য সম্পূর্ণ কর অব্যাহতি দিল এনবিআর।

 

সভা সূত্রে আরো জানা যায়, সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত গাড়ির ফিটনেস নিবন্ধনের সময় উৎসে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

 

বৈঠকে উপস্থিত এনবিআরের সদস্য ফরিদ উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, বিল্ড ওন অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার (বিওওটি) পদ্ধতিতে নির্মিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে ১৫ বছরের কর অবকাশের প্রস্তাব দেয় ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এরপর এনবিআর তাদের প্রস্তাব যাচাই-বাচাইয়ের পর কর অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

এর আগে ওরিয়ন গ্রুপ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এক যৌথ প্রস্তাবের সঙ্গে স্থানীয় সরকার এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একমত পোষন করেন।

 

এনবিআর সূত্রে আরো জানা যায়, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণে ২০০৫ সালে চুক্তি সই করে তত্কালীন ঢাকা সিটি করপোরেশন ও ওরিয়ন। চুক্তি অনুযায়ী, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেলের টোল হওয়ার কথা ৫ টাকা, অটোরিকশা ১০, কার ৩৫, জিপ ৪০, মাইক্রোবাস ৫০, পিকআপ ৭৫, মিনিবাস ও চার চাকার ট্রাক ১০০, বাস ও ছয় চাকার ট্রাক ১৫০ এবং ট্রেলার ও কাভার্ড ভ্যান ২০০ টাকা।

 

তবে উদ্বোধনের পরদিন (১২ অক্টোবর) থেকেই এক্ষেত্রে মোটরসাইকেলে ১০ টাকা, অটোরিকশা ১৮, কার ৬০, জিপ ৭০, মাইক্রোবাস ৮৫, পিকআপ ১৩০, মিনিবাস ও চার চাকার ট্রাক ১৭৩, বাস ও ছয় চাকার ট্রাক ২৬০ এবং ট্রেলার ও কাভার্ড ভ্যান থেকে ৩৪৫ টাকা টোল আদায় করা হচ্ছে।

 

ফ্লাইওভার নির্মাণে বিওওটি পদ্ধতিতে ২০০৫ সালে কার্যাদেশ দেয়া হয়। তবে শর্তভঙ্গের কারণে ২০০৭ সালে চুক্তি বাতিল করে তত্কালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের জুনে এর নির্মাণকাজ আবার শুরু করে ওরিয়ন। কিন্তু নতুন করে চুক্তি করা হয়নি। মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতেই তা নির্মাণ করা হয়।

 

এ ছাড়া ফ্লাইওভার নির্মাণে চুক্তি ছিল যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান বেলহাসা-একম অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে, যার মধ্যে ওরিয়নের শেয়ার ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। পরে তা পরিবর্তন করে পুরো মালিকানা (সব শেয়ার) ওরিয়নের নামে স্থানান্তর করা হয়।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/ ১০ নভেম্বর ২০১৪/নওশের