বাজেট

ফুলের নাম জারবেরা

ওপরে পলিথিনের শেড। নিচে লাল, সাদা, হলুদ, পিংক, ম্যাজেন্ডা, কমলা রঙের জারবেরা ফুল। এই ফুল দেখে ফুলচাষীরা খুশি। কারণ একটাই এই ফুলের চারা এতদিন তারা ভারত থেকে চোরাপথে কিনে আনতেন। তাও সেটা পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের বাঙ্গালোর, পুনে থেকে। আর এখন এই চারা তৈরি হচ্ছে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে বাংলাদেশে।

সূর্যমুখী পরিবারের জনপ্রিয় ফুলটির নাম জারবেরা। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াসের বন্ধু জার্মান উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ও প্রকৃতিবিদ ট্রাউগট গেরবার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে। সাধারণত ফুলটি আফ্রিকান ডেইজি নামেও পরিচিত। প্রায় ৩০টি প্রজাতির জারবেরা ছড়িয়ে আছে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ায়। ফুলটি পৃথিবীব্যাপী কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।সূর্যমুখীর মতো দেখতে এই ফুলগাছের পাতা পালং শাকের মতো। দেশে লাল, সাদা, হলুদ, গোলাপি, কমলাসহ কয়েকটি রঙের জারবেরার চাষ হয়। সারা বছরই জারবেরা ফুল ফোটে।

যশোরের গদখালীতে অন্যান্য ফুলের সঙ্গে ২০০৮ সাল থেকে চাষ হচ্ছে জারবেরা এবং ২০০৯ সাল থেকে ইউরোপের ফুল লিলিয়াম। জারবেরা ও লিলিয়ামের চারা ফুল চাষীরা ভারত থেকে চোরাপথে নিয়ে আসতেন। জারবেরা ফুলের চাহিদা ব্যাপক। জারবেরা ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্য ফুলের জগতে এক আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। সাধারণত জারবেরা ফুল গাছ থেকে তোলার ৮-১৫ দিন এবং গাছে ফোটা অবস্থায় ৩০ থেকে ৪৫ দিন সতেজ থাকে। ফলে বাসা বাড়িতে এর চাহিদা অনেক।

জারবেরা ফুলের বীজ থেকে চারা হয় না। সাকার উৎপাদনের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করে। মাতৃগাছ থেকে বারবার চারা উৎপাদন করলে এই ফুলের গুণগতমান ও উৎপাদন হ্রাস পায়। এক সঙ্গে অল্প সময়ে অধিক চারার জন্য এবং জীবাণুমুক্ত চারার জন্য টিস্যু কালচার আবশ্যক। একবার চারা রোপণ করলে বহু বছর ফুল পাওয়া যায়। চারা রোপণের ১ বছর পর থেকে ফুল ও স্টিক ছোট হতে থাকে। বাণিজ্যিক চাষের ক্ষেত্রে এক বছর পরপর নতুন চারা রোপণ করা ভাল। চারা রোপণের ৬০ দিনের মধ্যে ফুল আসে। জারবেরা একটি বীরুৎ জাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ।  একটি গাছ থেকে বছরে ৫০ থেকে ৬০টি ফুল পাওয়া যায়।

জানা যায়, সোয়া দুই কাঠা জমিতে জারবেরা ফুল চাষ করতে খরচ হয় ১ লাখ ৪২ হাজার টাকার মতো। কিন্তু এক বছরে ফুল বিক্রি হবে প্রায় ২ লাখ টাকার। এছাড়া পরের বছর খরচ আরও কম। তাই এই ফুল চাষে এগিয়ে এসে অনেকে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।