মতামত

তেলিয়াপাড়ার যুদ্ধ এবং কয়েকটি স্মৃতি

মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া, এমপি: কুমিড়ার যুদ্ধের পর আমি কালুরঘাটস্থ বিপ্লবী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। ৩০ মার্চ বেতার কেন্দ্রটি পাকবাহিনীর হাতে ধ্বংসের পর আমি রামগড় দিয়ে সার্বরুম হয়ে আগরতলা পৌঁছি। সেখানে ৩নং সেক্টরের অধীনে বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেই। তেলিয়াপাড়ার লড়াই তেমনি একটি অধ্যায়। আজ স্বাধীনতা দিবসে পাঠকদের সামনে সেই লড়াইয়ের অংশ বিশেষ তুলে ধরছি। ২৫ এপ্রিল ১৯৭১। আমি তখন সিলেট জেলার তেলিয়াপাড়ায়। এটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেটের মধ্যে রেল ও সড়ক পথের সংযোগ স্থল। ২৭ এপ্রিল আমি তেলিয়াপাড়ায় নতুন করে দায়িত্ব গ্রহণ করি। সেখানে আমি ও ক্যাপ্টেন মতিন (গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা) যৌথভাবে কাজ করি। আমাদের অধীনে প্রায় ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিল ইস্ট বেঙ্গল পাকিস্তান রাইফেলস-এর। এ ছাড়াও কিছু সংখ্যক ছিল মুজাহিদ বাহিনীর। তেলিয়াপাড়ায় শত্রু বাহিনীর সাথে আমাদের তুমুল লড়াই হয়। এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলাম আমি ও মেজর মতিন। আমরা তেলিয়াপাড়ায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়ার প্রথম দিনেই শত্রু আমাদের ওপর আক্রমণ চালায় এবং তুমুল লড়াইয়ের পর তেলিয়াপাড়া দখল করে নেয়। এই আক্রমণটা ছিল অত্যন্ত আকস্মিক যুদ্ধের ট্যাকনিক্যাল দিকটা বিচার করলে, আক্রমণের সময় যে বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রতি আমাদের লক্ষ্য রাখতে হয় তাদের মধ্যে একটি হলো অতর্কিতে আক্রমণ। এই অতর্কিতে আক্রমণের কারণেই আমরা পিছু হটতে বাধ্য হই। কিন্তু শত্রুরা তেলিয়াপাড়া দখল করার পর মুহূর্তেই আমরা খুব অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালাই এবং হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হই। তেলিয়াপাড়া থেকে যখন আমরা পিছু হটতে বাধ্য হই, তখন আমাদের ছেলেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। কিন্তু এই ছত্রভঙ্গ অবস্থায়ই আমরা যখন পাল্টা আক্রমণ চালাই, শত্রু তখন পিছু হটতে বাধ্য হয়। পাল্টা আক্রমণের সময় মেজর মতিনের সাথে যে দলটি ছিল তারা উচ্চ স্বরে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে ফায়ার করতে করতে অগ্রসর হওয়ার সময় শত্রুবাহিনী অনেকটা ঘাবড়ে যায়। যদিও লোকসংখ্যা কম ছিল, তবুও শ্লোগানের আওয়াজে মনে হচ্ছিল যেন আমরা সংখ্যায় অনেক। এখানে আরেকটা কথা উল্লেখ না করে পারছি না যে, পাল্টা আক্রমণের সময় আমরা মর্টারের সাহায্য নিয়েছিলাম। মর্টার ছিল মাত্র একটা, কিন্তু তাতে আবার সাইট ছিল না। বিনা সাইটে মর্টারের গোলা যেভাবে কার্যকরী হয়েছিল তা সত্যিই ভুলবার নয়। সাইট না থাকায় আমাকে আন্দাজের ওপর গোলা নিক্ষেপ করার আদেশ দিতে হয়। শত্রুবাহিনী তেলিয়াপাড়া দখল করার পর যেখানে একত্রিত হয়েছিল, ঠিক সেখানেই গোলাগুলো পড়ে। গোলা এত সঠিকভাবে শত্রু বাহিনীর ওপর পড়বে, এ ছিল আমাদের কল্পনারও বাইরে। তেলিয়াপাড়া পুনরুদ্ধারের পর শত্রুবাহিনী বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এমন কি সে সময় তারা আমাদের ওপর দিনে দুবার আক্রমণ করে। কিন্তু প্রতিবারই আমাদের ছেলেরা শত্রুবাহিনীর আক্রমণের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়। কয়েকদিন লড়াই চলার পর আরো কিছু সংখ্যক লোক পাঠিয়ে আমাদের শক্তি আরো বৃদ্ধি করা হয়। তেলিয়াপাড়ায় অবস্থানকালে আমাদের দারুণ অসুবিধার ভিতর দিন কাটছিলো। খাওয়া-দাওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। প্রায় পাঁচ দিনের মতো আমরা ঠিকমতো কোনো খাবারই পাইনি। তাছাড়া খাবার যাও পাওয়া যেত, তা কখনো নিশ্চিন্তে খাওয়ার উপায় ছিল না। শত্রু পক্ষ ঠিক খাওয়ার সময় আমাদের ওপর কামানের গোলাবর্ষণ শুরু করতো। এ অবস্থায় আমরা কাঁচা কাঁঠাল এবং আধাপাকা লিচু খেয়েই দিনের পর দিন কাটিয়ে দেই। সে সময় কয়েকদিন প্রবল বৃষ্টিও হয়েছিল। বৃষ্টির পানিতে আমাদের ট্রেঞ্চগুলো ভরাট হয়ে যায়। রাতে শত্রুর আক্রমণের সময় সেই সব পানি ভর্তি পরিখায় অবস্থান নিয়েই আমাদের তাদের মোকাবেলা করতে হতো। আমার স্পষ্ট মনে আছে, এক সময় আমি এবং আমার রানার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পানি ভর্তি পরিখায় ছিলাম। আমাদের হাতে ঐ সময় কোনো ম্যাপ ছিল না। ছিল না কোনো দূরবীণ, প্রোটেকটার বা কম্পাস। বলতে গেলে আমাদের হাতে তখন ৩০৩ রাইফেল এবং কতগুলো এলএমজি ছাড়া আর কিছু না। অবশ্য দুটো মর্টার ছিল যার কোনো সাইট ছিল না। এ সময় শত্রুরা রাতদিন কামান থেকে গোলাবষর্ণ করত। এই শেলিংয়ের কারণে আমাদের কয়েকজন সৈনিক ঐ সময়ে শাহাদাৎ বরণ করে। একদিন শত্রু পক্ষের একটি আর্টিলারি শেল এসে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ডাক বাংলোর সামনে পড়ে। তাতে বটগাছের নিচে অবস্থানরত আমাদের ৫ জন ছাত্র শহীদ হন এবং সেখানেই তাদের সমাহিত করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে আমার এবং ক্যাপ্টেন মতিনের মধ্যে তখন প্রায়ই যোগাযোগ থাকত না। যুদ্ধ ক্ষেত্রে বেতার যোগাযোগের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বেতার যোগাযোগ দ্বারা যুদ্ধক্ষেত্রে কমান্ড এবং কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত হয়। সেই প্রচণ্ড লড়াইয়ের ভিতর কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় মনে হতো সবাই যেন পজিশন ছেড়ে চলে গেছে, আমি একাই যেন সেখানে বসে রয়েছি। সেই প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে আদৌ বোঝা সম্ভব ছিল না কে কোথায় মৃত্যুর সাথে লড়ে যাচ্ছে। একমাত্র খোদার ওপর ভরসা করে নিজের অবস্থানে বসে থাকতাম। প্রাণপণে মোকাবেলা করে যেতাম শত্রুকে। আমাদের সাথে যে সব ইপিআর, মুজাহিদ ও ছাত্র সংগ্রামীরা ছিল তারা সবাই শত্রুর বিরুদ্ধে প্রাণপণে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তেলিয়াপাড়ার যুদ্ধে মুজাহিদ দুলা মিয়া, যে সাহস ও মৃত্যু ভয় তুচ্ছ করে লড়াই করেছিল তার কথা আজও মনে পড়ে। কুমিল্লার সালদা নদীর কাছে দুলা মিয়ার বাড়ি। লড়াইয়ে তার অসীম সাহস দেখে ক্যাপ্টেন মতিন তাকে একটা সেকশনের নেতৃত্বের ভার দেন। বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের জন্য এই অকুতোভয় দুলা মিয়া এবং আরেকজন দুঃসাহসী ছেলে (তার নাম এখন মনে পড়ছে না) মেজর সফিউল্লাহর কাছ থেকে ২৫ টাকা করে পুরস্কার পেয়েছিল। দুঃসাহসী মুজাহিদ দুলা মিয়া পরে সিলেটের মুকুন্দপুরের লড়াইয়ে শত্রুর হালকা মেশিনগানের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। কয়েকটি গুলি তার পেটে এসে লাগে। কিন্তু মারাত্মকভাবে আহত হওয়া সত্ত্বেও দুলা মিয়া তার জায়গা ছেড়ে পিছু হটেন নি। একইভাবে সে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় পরে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তেলিয়াপাড়ায় লড়াই করার সময় খাওয়া-দাওয়ার মারাত্মক অসুবিধার কথা আগেই বলেছি। লড়াইয়ের ষষ্ঠ দিন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস-এর একটি ছেলে এসে জানালো তার গায়ে জ্বর, তার শরীর কাঁপছে এবং গত পাঁচদিন ধরে সে খাবার পায় নি। হাতের রাইফেল মাটিতে রেখে দিয়ে সে হতাশার সুরে বলল, খাওয়া ছাড়া কীভাবে লড়াই করি। আমার দ্বারা আর লড়াই করা সম্ভব না। তেলিয়াপাড়া থাকাকালীন আমাদের হেডকোয়ার্টার ছিল সীমান্তে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত। প্রায় এক নাগারে ৬ দিন লড়াই করার পর ক্যাপ্টেন মতিন এবং আমাকে সৈন্যসহ হেড কোয়ার্টারে উঠিয়ে নেয়া হলো। আমাদের জায়গায় তেলিয়াপাড়ায় এলেন লে. মোরশেদ এবং তার সৈন্যদল। এরা ছিলো ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্য। লে. মোরশেদের সৈন্যদের সঙ্গে তেলিয়াপাড়াতে শত্রু বাহিনীর প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়। তেলিয়াপাড়ায় থাকাকালীন লে. মোরশেদ কয়েকটি চমৎকার এ্যাম্বুশ করেন। শুধু একটি এ্যাম্বুশেই সে পাতা মাইনের সাহায্যে দুই ট্রাক ভর্তি শত্রু সৈন্য নিহত হয়, আহতও হয় প্রচুর। লে. মোরশেদ সেখানে কিছুদিন ছিলেন। পরে সেখানে মেজর সফিউল্লাহর নির্দেশে আমি পুনরায় তার স্থলাভিষিক্ত হই। এ সময়কার একটি মজার ঘটনা বলি। লে. মোরশেদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পর সকাল আটটায় ডিফেন্স পজিশন অর্থাৎ প্রতিরক্ষা অবস্থান পরীক্ষা করতে শুরু করি। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের কয়েকটি ছেলে যারা আমার অধীনে চাকরি করত, তাদের কয়েকজন সে সময়ে লে. মোরশেদের অধীনে যোগ দিয়েছিল। প্রতিরক্ষা অবস্থান চেক করতে গিয়ে এলএমজি পজিশনের কাছে ওদের কয়েকজন সিপাইয়ের সাথে আমার প্রায় দশ মিনিট ধরে আলাপ হয়। জোয়ানদের মনোবল অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য তখন তাদেরকে নানাভাবে উৎসাহিত করে তুলছিলাম। তারপর জোয়ানদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে খোঁজ নিলাম। তখন আলাপ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামে আমার অধীনে যারা চাকরি করেছিল তাদের মধ্যে একজন আমাকে প্রশ্ন করলো, স্যার, চট্টগ্রামে আমাদের কম্পানি কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া, তার খবর কী? তিনি কি বেঁচে আছেন? আমরা শুনেছি তিনি নাকি চট্টগ্রামের লড়াইয়ে শহীদ হয়েছেন। তার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম ছেলেটার মাথা খারাপ নাকি। সে আমার অধীনে চাকরি করেছে অথচ আজ আমাকেই চিনতে পারছে না। যা হোক, উত্তরে তাকে বললাম, তুমি আস্ত বোকা। কিন্তু উত্তর সন্তোষজনক না হওয়াতে সে আবারও প্রশ্ন করল, সত্যি স্যার, বলুন না, ক্যাপ্টেন ভূঁইয়ার খবর কী? তিনি কি বেঁচে নেই? হেসে বললাম, এতক্ষণ তুমি ক্যাপ্টেন ভূঁইয়ার সাথেই কথা বলছো। আমার জবাব শুনে সে বিস্ময়ে নির্বাক হয়ে যায়। গভীর দৃষ্টিতে আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে বলে, স্যার, আপনি একেবারে বদলে গেছেন। সত্যি বদলে যাবার কথা। সে সময়ে আমার মাথায় চুল ছিল না। তাই সব সময়ই মাথায় জিন্না টুপি পরে থাকতাম। আমাকে চিনতে না পারার এর চেয়েও বড় কারণ, আমার তখন মুখ ভর্তি দাড়ি। পরনে একটা ছেড়া শার্ট ও লুঙ্গি। পা একেবারেই খালি। অতএব এ অবস্থায় আমাকে চিনতে আরও কঠিন ছিল বৈকি। কেবল ওই ছেলেটিই নয়, সেদিন আমাকে চিনতে আরও অনেকেই ভুল করে। তখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, নাওয়া খাওয়ার কোনো ঠিক ঠিকানা ছিল না, শরীরের যত্ন নেয়া তো অনেক দূরের কথা। তেলিয়াপাড়া থাকাকালীন সর্বসাকুল্যে একবারই মাত্র গোসল করেছিলাম। আমার সংগ্রামী সহযোদ্ধা ছেলেদেরও অবস্থা ছিল অনুরূপ। লড়াইয়ের পজিশন ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া সম্ভব হয় নি। আমি এবং ক্যাপ্টেন মতিন যে সময়ে তেলিয়াপাড়া থেকে চলে যাই, তখন লক্ষ্য করি শতকরা ৩০ জন ছেলেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমাদের যে সব সংগ্রামী তরুণ তেলিয়াপাড়ার লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে তারা কখনো তেলিয়াপাড়ার কথা ভুলতে পারবে না। কারণ প্রতিরক্ষা সংগ্রামে তেলিয়াপাড়াতেই আমাদের সবচেয়ে বেশি কষ্টের ভেতর দিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে। এই লড়াইয়ে পাকিস্তান বাহিনীর ক্ষতিও হয় প্রচুর। একদিনের লড়াইয়ে আমরা একটা সাতটনি ট্রাক দখল করি। শত্রু বাহিনী তেলিয়াপাড়ায় আমাদের সাথে প্রাণপণে লড়াই করে। সতেরো দিন প্রাণপণে যুদ্ধের পর শত্রুবাহিনী আমাদের তিন দিক দিয়ে আক্রমণ করে। শত্রুর এই ত্রিমুখী আক্রমণের ফলে আমাদের বাধ্য হয়ে তেলিয়াপাড়া ত্যাগ করতে হয়। তবুও এই সতেরো দিন মাটি কামড়ে পড়ে থাকায় বিরল কিছু অভিজ্ঞতা হয়। শত্রুর মেশিনগানের বিরুদ্ধে থ্রি নট থ্রি দিয়েও লড়াই চালিয়ে যাওয়া যায় যদি মনোবল থাকে। অনাহার, অন্ধকার, বৃষ্টি, শীতও হার মানে মানুষের দেশপ্রেমের কাছে। আমরা সৈনিক বলেই যে কোনো প্রতিকূল অবস্থার জন্যই প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু যারা সাধারণ মানুষ, কৃষক, ছাত্র এদের অসীম দেশপ্রেমের কোনো তুলনা নেই। বিশেষ করে ওয়াকার আর সাদেক। দুজনই তখন ইউনিভার্সিটির ছাত্র। পরে অবশ্য তারা সেনাবাহিনীতে কমিশন পায়। এই ওয়াকার আর সাদেক শত্রুর মনে ভীতি সঞ্চার করার জন্য গোটা দশেক থ্রি নাট থ্রি রাইফেল এক জায়গায় জড়ো করে ওয়ান টু থ্রি বলে এক সাথে ফায়ার করত। তাতে বাজ পড়ার মতো শব্দ হতো। সেই বিকট আওয়াজ নির্ঘাৎ শত্রুর বুকও কাঁপিয়ে দিত। তাই তেলিয়াপাড়া প্রতিরক্ষা যুদ্ধের সেই দিনগুলোর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। ওখানে যুদ্ধরত অবস্থায় আমরা নিত্য নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করি যা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে দক্ষ সৈনিকে রূপান্তর করতে সাহায্য করে। লেখক: মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি

       

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মার্চ ২০১৭/তারা