জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮

‘নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ফাঁদে পা দেব না’

নোয়াখালী প্রতিনিধি : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘সরকার যত অপকৌশলই করুক না কেন, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ফাঁদে পা দেব না।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের ন্যূনতম কোনো পরিবেশ নাই। তবুও আমরা এখন পর্যন্ত টিকে আছি। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বাস করে হাজারো প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও আমরা নির্বাচন অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিই।’ শনিবার নোয়াখালী আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মওদুদ আহমদ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে আমাদের প্রতি অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা তীব্রতর করেছে সরকার। পুলিশ, সিভিল প্রশাসন সরকারের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। জনগণের মৌলিক অধিকারহরণ করা হয়েছে। গত তিন দিনে ২০০ নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে। ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির প্রচারণার মাইক ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমার নির্বাচনী এলাকায় মন্ত্রী-এমপিরা নেতা-কর্মী, সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীদের নির্দেশ দিয়েছে- যেখানেই মওদুদ সেখানেই প্রতিহত করো। পাশ্ববর্তী উপজেলা সোনাগাজী দাগনভূঁইয়া থেকে মুখোশ পরা হেলমেট মাথায় ভাড়াটিয়া গুন্ডারা সারাদিন নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটাই বাংলদেশের প্রথম নির্বাচন যে নির্বাচনে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে সরকার বা নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এটি নির্বাচনী উৎসব নয়, জাতীয় ট্র্যাজেডি।’ মওদুদ আহমদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না।’ এ সময় নোয়াখালী-১ আসনের বিএনপি প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী-২ আসনের প্রার্থী ও বিএনপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, নোয়াখালী-৩ আসনের প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ ভুলু, নোয়াখালী-৪ আসনের প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান এবং নোয়াখালী-৬ আসনের প্রার্থী ফজলুল আজিম উপস্থিত ছিলেন। মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস ছিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জেলায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু মন্ত্রী নিজেই সকল প্রটোকল নিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন।’ বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৪ আসনের প্রার্থী মো. শাহজাহান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নোয়াখালী এওজবালিয়া ইউনিয়নে নিজেরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে সাত বছর আগে মারা যাওয়া লোক এবং গত তিন বছর থেকে প্রবাসে অবস্থান করছে এমন লোককে। অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি আমরা। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কর্মকাণ্ড যেভাবে দেখছি, এতে মনে হয় আগামী ৩০ ডিসেম্বর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কোনোভাবেই অনুষ্ঠিত হবে না। নির্বাচনী মাঠে নামার পর সরকার বুঝে ফেলেছে তাদের অবস্থা ভালো নয়।’ রাইজিংবিডি/নোয়াখালী/১৫ ডিসেম্বর ২০১৮/মাওলা সুজন/সাইফুল