জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮

অভিযোগ করলেন মুক্তাদির, উড়িয়ে দিলেন মোমেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : ভোট নিয়ে শঙ্কায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন মর্যাদার আসন খ্যাত সিলেট-১ (সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা) আসনের বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। তিনি নির্বাচনে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগও করেন। তবে তার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে একই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আবদুল মোমেন বললেন, ‘নির্বাচন খুব ভালো হচ্ছে। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে। তিনি একে ঈদ উৎসবের আনন্দের সাথেও তুলনা করেছেন।’ রোববার সকালে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে এসব কথা বলেন তারা। সকাল ১০টার দিকে নগরীর সারদা হল কেন্দ্রে ভোট দেন ধানের শীষের প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। ভোটদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানুষ গভীরভাবে পরিবর্তন প্রত্যাশা করছে বলেই তারা বাধা উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে যাচ্ছে। তবে তুচ্ছ অজুহাতে ভোটের গতি কমানো হচ্ছে, মানুষকে নিরুসাহিত করা হচ্ছে। ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে।’ আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘ভোট শুরু হওয়ার পর পাঠানটুলা, আম্বরখানাসহ কয়েকটি এলাকায় তার এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মেজরটিলা জামেযা থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া, অনেক সেন্টারে পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রিজাইডিং অফিসাররা বিভিন্ন অজুহাতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না।’ রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘আমি আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে অভিযোগ জানালাম। ওখানে অভিযোগ করে কী হবে? আমরা বারবার প্রশাসনকে বলছি। নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা এমনকি নির্বাচন কমিশন বরাবরে ডজনের মতো অভিযোগ করেছি, একটিরও প্রতিকার পেলে মনে সান্ত্বনা পেতাম, কিন্তু হয়নি।’ অন্যদিকে, সকাল সোয়া ১০টার দিকে দিকে নগরীর বন্দরবাজারস্থ দূর্গাকুমার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (দূর্গাকুমার পাঠশালা) কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ড. মোমেন। ভোটদান শেষে সাংবাদিকরা তার কাছে বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘বিএনপিঅভিযোগ পার্টি। তাদের কোনো অভিযোগের ভিত্তি নেই।’ তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে আমি যেসব কেন্দ্রে গিয়েছি সবখানেই উৎসবের মাধ্যমে ভোটাররা লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন এমনটা দেখেছি। শান্তিপূর্ণভাবে তারা ঈদ আনন্দের মতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। প্রতিটি সেন্টারে আমি ঢুকেছি, সবখানেই বিএনপির পোলিং এজেন্ট পেয়েছি। তারা ওখানে সুখে-শান্তিতে আছে। ভালো নির্বাচন হচ্ছে। সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হচ্ছে। আমি আশাবাদী বিজয় আমাদেরই হবে।’ সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীসহ বিভিন্ন দলের ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রোববার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকালে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে দেখা গেছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার এম কাজী এমদাদুল ইসলামের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের মোট ছয়টি সংসদীয় আসনে প্রার্থীর সংখ্যা ৪৪ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২২ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৪ জন। মোট কেন্দ্র- ৯৯২টি। একটি সিটি করপোরেশন ও ১৩টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত এ জেলায় মোট ৪৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটের দিনে ১৫ হাজার ২৫৪ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া, নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে ১৪ ইউনিট সেনাবাহিনী, ২৯ প্লাটুন বিজিবি, ৩০০ র‌্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। রাইজিংবিডি/সিলেট/৩০ ডিসেম্বর ২০১৮/আব্দুল্লাহ আল নোমান/সাইফুল