ফটো ফিচার

‘সিনিয়র বলেই কেউ আমাকে অপমান করতে পারে না’

ভারতীয় বাংলা টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তৃণা সাহা। ২০১৬ সালে ‘খোকা বাবু’-এর মাধ্যমে টিভি সিরিয়ালে অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয়। এ সিরিয়ালে ‘তরী’ চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তারপর ‘কলের বউ’, ‘খড়কুটো’, ‘বালিঝড়’-এর মতো ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। মূলত, টিভি ধারাবাহিকে কাজ করেই দর্শকদের নজর কাড়েন তৃণা।

টিভি নাটকে অভিনয়ের আগে চলচ্চিত্রে নাম লেখান তৃণা। ২০১৫ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্রেম করেছি বেশ করেছি’। জিৎ অভিনীত এ সিনেমায় ক্যামিও চরিত্রে দেখা যায় তৃণাকে। পরবর্তীতে ‘পাসওয়ার্ড’, ‘ডিটেকটিভ’, ‘শ্রীমতি’-সহ বেশ কটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।

২০১৯ সালে ওয়েব সিরিজে নাম লেখান তৃণা সাহা। তার অভিনীত প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘কামিনী’। তারপর ‘মিড নাইট মিরর’, ‘মার্ডার বাই দ্য সিন’ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেন তৃণা। এ অভিনেত্রীর পরবর্তী ওয়েব সিরিজ ‘মাতঙ্গী’। এরই মধ্যে সিরিজটিতে তার অংশের প্রায় ৫০ শতাংশ শুটিং শেষ করেছেন। কিন্তু এরই মাঝে তৈরি হয়েছে বিপত্তি। এজন্য গত কয়েক দিন ধরে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন এই অভিনেত্রী।

‘মাতঙ্গী’ ওয়েব সিরিজে তৃণার সহশিল্পী সোহিনী সরকার। এর শুটিং সেটে সোহিনীর সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। শুটিং সেটে নিজস্ব মেকআপ আর্টিস্ট আর হেয়ার ড্রেসার নিয়ে যান সোহিনী সরকার। সেই খরচ বহন করে প্রযোজনা সংস্থা। ‘মাতঙ্গী’-এর ওয়েব সিরিজের ক্ষেত্রেও তাই করেন সোহিনী। এদিকে তৃণা বিষয়টি জানতেন না। শুটিংয়ে গিয়ে বিষয়টা জেনে তিনিও একই সুযোগ দাবি করেন। আর তা নিয়েই ঝগড়ার সূত্রপাত। তৃণার বিরুদ্ধে পরিচালকদের অপমানের অভিযোগও উঠেছে। ঘটনার পরই চিৎকার চেঁচামিচি শুরু হয়, সেট ছেড়ে বেরিয়ে যান তৃণা সাহা। বন্ধ হয়ে যায় সিরিজটির শুটিং। শোনা যাচ্ছে, সিরিজটি থেকে তৃণাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরগরম কলকাতার শুটিংপাড়া।

দুই নায়িকার চুলোচুলি হওয়ার পর তারা দুজনেই মুখে কুলুপ আঁটেন। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেতা নীলের ঘরণী তৃণা। তার ভাষায়— ‘সোহিনী ব্যক্তিগত মেকআপ এবং হেয়ার আর্টিস্ট পাচ্ছেন বলে আমারও চাই, এ কথা আমি একবারও বলিনি।’

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তৃণা সাহা বলেন, ‘‘এ প্রসঙ্গে যা বলা হচ্ছে তা মিথ্যা। ও আলাদা ওয়াশরুমও পেয়েছে ওই সেটে। কই এ নিয়ে তো আমি কিছু বলিনি। আমি চিত্রনাট্য শোনার সময়ই জানিয়েছিলাম, আমার একটা মেকআপ রুম দরকার। তখন দীপাঞ্জনদা ‘হ্যাঁ’ বলেছিলেন। পরে আমাকে সেটা দেওয়া হয়নি।’’

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তৃণা সাহা বলেন, ‘এরপর দেখলাম কেউ ৩৫ মিনিট লেট করে সেটে ঢুকছেন। রোজ এমন হওয়ায় আমি পরিচালককে জানিয়েছিলাম, প্রতিদিন এক ঘণ্টার বেশি দেরি হয়ে গেলে, আমিও লেট করে ঢুকব। এটা আমি ফ্লোরে আলাদা করেই বলেছিলাম। এটা আমাদের ব্যক্তিগত কথা ছিল।’

সোহিনীর আচরণে মনোক্ষুন্ন তৃণা। তা জানিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘এরপরই দেখি, গ্রুপে বড় একটি পোস্ট দিয়েছে সোহিনী। মেকআপ রুম, বাথরুম নাকি যোগ্যতা অনুযায়ী পায় অভিনেতারা। ও কারো নাম না করেই পোস্ট দিয়েছে। কিন্তু মেসেজটা দেখে একটা বাচ্চাও বুঝবে ওটা কাকে উদ্দেশ্য করে বলা। আমি এটা সোহিনীর কাছ থেকে আশা করিনি।’

একসময় সোহিনীর সঙ্গে খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল তৃণার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সোহিনী আমার বাড়িতে এসেছে। আমার সঙ্গে পার্টি করেছে। তবে ও যে এই ধরনের একটা মেসেজ করে আমাকে অপমান করবে, সেটা ভাবিনি। সিনিয়র বলেই কেউ আমাকে অপমান করতে পারে না।’