রাজনীতি

‘বিএনপিকে বাদে কোনো নির্বাচন হবে না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিএনপি বাদে কোনো নির্বাচন হবে না বলে  আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য দিয়েছেন দলের মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা দৃঢ় কন্ঠে বলতে চাই, নির্বাচনে আস্থাশীল একটি দল, নির্বাচনে বিশ্বাসী একটি সংগঠন বিএনপি এবং বিএনপির চেয়ারপারসন যিনি বারবার অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেছেন; তাকে ও তার দলকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারবে না।’ ‘অবশ্যই বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। সরকারের অশুভ কোনো পরিকল্পনা আর বাস্তাবায়ন সম্ভব হবে না’, বলেন বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। এর আগে বুধবার এক অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘চলমান মামলাগুলোতে খালেদা জিয়ার সাজা হলে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ’ রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, খালেদা জিয়ার জন্য সংবিধান ও নির্বাচন বসে থাকবে না। ওবায়দুল কাদের সাহেবের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-নির্বাচন কি তাহলে শুধু শেখ হাসিনার জন্যই  বসে থাকবে ? তার মুখ চেয়েই নির্বাচন হবে কি হবে না সেটি নির্ধারিত হবে ?’ তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের এ ধরনের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীকে সুখের ইন্ধন দিতে পারে, কিন্তু জনগণের মধ্যে তা বড় ধরনের আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে। তার বক্তব্যে যে ষড়যন্ত্র ও অশুভ পরিকল্পনার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত আছে তা কারো হৃদয়াঙ্গম করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সংবিধানের দোহাই দিয়ে একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন করার যেকোন অপচেষ্টা এ দেশের জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দেবে।’ শাসকদল সংবিধানকে নিজেদের মতো করে সাজিয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য সেই দখলেরই প্রতিধ্বনি। আওয়ামী লীগ ও ভোট সন্ত্রাস একে অপরের পরিপূরক। তবে বারবার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে পার পাওয়া যাবে না। ভোট সন্ত্রাস বনাম সুষ্ঠু নির্বাচনের দ্বন্দ্বেই মানুষের ভোটাধিকার বিজয়ী হবে, এটাই হচ্ছে ইতিহাসের নিয়ম।’ পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়নি বলে কানাডিয়ার আদালতের রায়ের পর বিশ্বব্যাংক নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের মন্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্বব্যাংকের সম্পর্কের অবনতি হতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। আর এতে করে দেশে চলমান অনেক উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নে সংকট সৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশে এখনও তাদের হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান। সরকারের মন্ত্রীরা বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করায় সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।’ বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক সম্পর্কে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী থেকে শুরু করে দায়িত্বজ্ঞানহীন নেতারা যেভাবে বক্তব্য রাখছেন তা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য অশনি সংকেত। যা দেশের জন্য শুভ নয়, অশুভ লক্ষণ। এর ফলে দেশ বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।’ এ সময় রিজভী অভিযোগ করেন, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজারী জাকির হোসেনের বাসায় বৃহস্পতিবার রাতে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। জাকিরকে না পেয়ে বাসা ভাঙচুর এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে বলেও দাবি করেন তিনি। এ ধরনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান রিজভী। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/রেজা/ইভা