রাজনীতি

‘প্রধানমন্ত্রীর গ্যাস রপ্তানি চুক্তি কোন মুচলেকা?’

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন যে গ্যাস রপ্তানির চুক্তি করছেন সেটা কোন ‘মুচলেকা’ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। শনিবার জাতীয় প্রসক্লাবের সামনে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে তিনি এ কথা বলেন। কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গ্যাস রপ্তানির মুচলেকা দিয়ে খালেদা জিয়া ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এমন কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘আমরা এ কথার সত্যতা আছে বলে মনে করি। কিন্তু আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই বাংলাদেশের নির্বাচনে জনগণের থেকে বিদেশি কোম্পানিই প্রধান হয়ে যায়। তাই আমরা বলতে চাই, তিনি এখন যে গ্যাস রপ্তানির চুক্তি করছেন সেটা কোন ‘মুচলেকা’ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ’ মহাপরিকল্পনায় বিদেশি স্বার্থ বেশি এমন কথা উল্লেখ করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা ভুলে ভরা। সরকারের মহাপরিকল্পনায় পরিষ্কারভাবে দেখানো হয়েছে বিদেশি কোম্পানি বঙ্গোপসাগরের গ্যাস উত্তোলন করে রপ্তানি করতে পারবে। আবার বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে সুন্দরবনে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে। বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে এলএমজি আসবে। তার মানে দেশের গ্যাস সম্পদ বিদেশি কোম্পানি লুট করবে। তিনি বলেন, গ্যাসের বাজার বাড়ানোর জন্য বিদেশিদের ওপর আমাদের নির্ভরশীল হতে হবে। তার মানে দেশে শিল্পায়ন হবে না, কৃষি উন্নয়ন হবে না। বাংলাদেশের মানুষকে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বোঝা বহনসহ লাখ লাখ টাকা ঋণের বোঝা বহন করতে হবে। গত ১৪ মার্চ সরকার দেশের গভীর সমুদ্রের যে সম্ভাবনাময় গ্যাস সম্পদ ও ব্লক আছে তার ১২ নম্বর ব্লক একটি বিদেশি কোম্পানির কাছে দেওয়া হয়েছে- এমন কথা জানিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘ওই কোম্পানি যতদিন পর্যন্ত তাদের ব্যয় না উঠবে ততদিন পর্যন্ত তারা শতকরা ৭০ ভাগ (আগে যা ছিল শতকরা ৫৫ ভাগ) পাবে। আর তাদের কোনো শুল্ক দিতে হবে না এবং তারা আন্তর্জাতিক বাজার দর থেকে তিনগুণ বেশি দামে দেশীয় কোম্পানির কাছে বিক্রি করবে।’ তিনি জানান, ‘আমরা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করছি তা এ মাসের মধ্যে শেষ হবে। আমরা দেখেছি অনেক কম দামে জনগণের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার যথেষ্ট সম্পদ বাংলাদেশে আছে। সে মহাপরিকল্পনা আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরব।’ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সরকার গ্যাস সঙ্কটের কথা বলে ভারত থেকে এলএমজি আমদানি করার মহাপরিকল্পনা করছে। এই এলএমজির ওপর দেশের জ্বালানি কী মাত্রায় নির্ভর করা হবে সেটা নিয়ে ভারতের সঙ্গে পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্যাস সঙ্কট সমাধানের একমাত্র উপায় অনুসন্ধান ও উত্তোলন। সে সঙ্কট সমাধানের জন্য যদি এমন চুক্তি করা হয় যে, গ্যাস বিদেশে রপ্তানি করা হবে। আন্তর্জাতিক দরের থেকে বেশি দামে কিনতে হবে। তাহলে গ্যাস সঙ্কটের সমাধান কোনো দিন হবে না। বরং সরকারের কিছু লোকের উন্নয়ন হবে- যোগ করেন তিনি। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ মার্চ ২০১৭/সাওন/মুশফিক