রাজনীতি

খালেদার জন্মদিনে বিএনপির দোয়া মাহফিল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার কারণে এ বছর জাঁকজমকভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদযাপন করেননি দলটির নেতা-কর্মীরা। এর পরিবর্তে দোয়া মাহফিল করে বিএনপিনেত্রীর জন্মদিন পালন করেছেন তারা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। সারা দেশে দলের শাখা কার্যালয়েও দোয়া মাহফিল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ওই দোয়া মাহফিলের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৭৩তম জন্মদিন। এই সময়ে দেশে প্রবল বন্যা দেখা দিয়েছে। সারা দেশের অবস্থা খুবই খারাপ। এই অবস্থায় দেশনেত্রী জন্মদিনের সব ধরনের আনন্দ কর্মসূচি নিষেধ করে দিয়েছেন। এজন্য আজকের অনুষ্ঠানটা শুধু দোয়া মাহফিল ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছি। দেশের এই অবস্থায় কোনো ধরনের আনন্দ অনুষ্ঠান করা যায় না, করা উচিৎও নয়।’ খালেদা জিয়ার বাবা এস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনী হলেও তিনি দিনাজপুরে বাস করতেন। খালেদা জিয়ার জন্মও সেখানে। তার মায়ের নাম তৈয়বা মজুমদার। ১৯৮১ সালে ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় জিয়াউর রহমান নিহত হলে তার গড়া বিএনপিতে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং তিন বছর পর চেয়ারপারসন হন তিনি। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। গত ৮ আগস্ট পূর্ব লন্ডনের মুরফিন্ড চক্ষু হাসপাতালে তার ডান চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার বিএনপির দোয়া মাহফিলে রুহুল কবির রিজভী জানান, ‘নেত্রীর চোখের ব্যান্ডেজ এখনো খোলা হয়নি। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ব্যান্ডেজ খোলা হবে। চিকিৎসকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সুস্থ আছেন তিনি।’ দোয়া মাহফিলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, মীর সরফত আলী সপু, এম এ মালেক, আবদুস সালাম আজাদ, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, কাজী আবুল বাশার, অ্যালবার্ট পি কস্তাসহ শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের সুস্থতা কামনা করে পরে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দিনে খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বহুদিন ধরে বিতর্ক চলছে। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার দুই বছর পর ১৯৯৩ সালের ১৫ আগস্ট জন্মদিন উদযাপন শুরু করেন খালেদা জিয়া। তবে সেটি ছিল ঘরোয়া পরিবেশে। ১৯৯৬ সালে বিরোধীদলে থাকা অবস্থায় ঘটা করে জন্মদিন পালন শুরু করেন তিনি। দলটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরাও দেশব্যাপী এই দিনটি জাঁকজমকভাবে পালন করে আসছেন। ওই সময় জাতীয়তাবাদী যুবদলের এক নেতা ও বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন শুরু হয় বলে দলীয় পরিমণ্ডলে আলোচনা আছে। ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদযাপন হলেও তার আরো কয়েকটি জন্মদিনের হদিস পাওয়া যায়। তার জন্মসাল নিয়েও দুই রকম তথ্য আছে। বাংলা পিডিয়াসহ খালেদা জিয়ার জীবনীর ওপর রচিত কয়েকটি গ্রন্থে তার জন্ম বছর ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দেখানো হয়েছে। ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সরকারিভাবে গণমাধ্যমে তার যে জীবনবৃত্তান্ত পাঠানো হয়েছিল, তা ২১ মার্চ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়। তাতে বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট দিনাজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ আগস্ট ২০১৭/রেজা/রফিক