জ্যেষ্ঠ প্রতিবদক : থাইল্যান্ড থেকে পচা চাল আমদানির নেপথ্যে ‘সরকারের রাঘববোয়ালরা জড়িত’ বলে দাবি করেছে বিএনপি। পচা চাল আমদানির মাধ্যমে সরকার সংবিধানবিরোধী কাজ করে জনগণের ক্ষুধা নিয়ে তামাশা করেছে বলেও মন্তব্য দলটির। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘প্রায় এক মাস আগে থাইল্যান্ড থেকে পচা চালের চালান আসার পর এখনও জাহাজ দুটি চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকায় একটি জিনিস পরিষ্কার, এর পেছনে সরকারের রাঘববোয়ালরা জড়িত।’ তারা গত ২০ দিন ধরে পচা চাল খালাসের চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে যেন কোনো বুমেরাং না হয় তাই সরকারের খাদ্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অনেকটা গোপনে কাজ করে গেছে। কোনো কারণে ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন তা হজম করতে পারছে না। এখন তাই বেসরকারিভাবে হলেও চাল বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদেশি দুটি জাহাজের সংশ্লিষ্টরা। প্রশ্ন হলো সরকারিভাবে আমদানি করা চাল বেসরকারিভাবে বিক্রির চেষ্টা কেন? রিজভী বলেন, ‘সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। কিন্তু খাদ্যের অনুপযোগী চাল বা গম সরবরাহ করা সংবিধান পরিপন্থী। এটির মাধ্যমে সরকার শুধু সংবিধানবিরোধী কাজই করেনি, মানবতাবিরোধী কাজ করছে, জনগণের ক্ষুধাকে নিয়ে তামাশা করছে।’ থাইল্যান্ড থেকে আমাদানি করা চালগুলো একবারেই খাওয়ার অনুপযোগী এবং অত্যন্ত নিম্নমানের মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু পচা চালের ঘটনা ফাঁস হয়ে গেছে তাই এখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এগুলো খালাস করা যাবে না। তাই খাদ্য বিভাগ চালগুলো ফিরিয়ে নিতে বলেছে থাইল্যান্ডের এ জাহাজ দুটিকে। এরপর থেকে পচা চাল নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় চট্টগ্রামজুড়ে।’ পচা চাল আমদানির পেছনে আরও কী কী রহস্য রয়েছে তা দ্রুত তদন্ত করে বের করা উচিত বলেও মনে করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘ইতোপূর্বে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গম কেলেঙ্কারির কথা নিশ্চয়ই দেশবাসী ভুলে যায়নি। সে সময় পচা গম কেলেঙ্কারির ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। বিষয়টি তখন উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়ে ছিল। উচ্চ আদালত পচা গম কেলেঙ্কারি তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশনা দিলেও আজও সে তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি।’ আইনমন্ত্রীর সমালোচনায় রিজভী : ‘বিচার বিভাগের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন করার চিন্তা সরকারের নেই’ বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দেওয়া বক্তব্যকে ‘হাস্যকর ও নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা কীভাবে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা মানুষ ভুলে যায়নি। রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী রক্তাক্ত উৎপীড়নের মর্মস্পর্শী ইস্যুর চেয়ে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে খিস্তিখেউর প্রাধান্য পেল ক্ষমতাসীনদের কাছে। এটা যেন তাদের কাছে জাতির মরা-বাঁচার ব্যাপার। অথচ চাল সংকট ও খাদ্য নিরাপত্তা সংসদের আলোচনায় গুরুত্ব পেল না, সত্যিকার অর্থে যেটা জনসাধারণের মরা-বাঁচার বিষয়।’ রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রেজা/মুশফিক