রাজনীতি

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি লুটপাটনীতির বহিঃপ্রকাশ : বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : আরেক দফা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিকে ‘অযৌক্তিক ও গণবিরোধী’ অভিহিত করে বিষয়টিকে সরকারের ‘লুটপাটনীতির বহিঃপ্রকাশ’ বলে বর্ণনা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও জনগণের রক্ত চুষে খেতে তা আবারও বাড়ানো হয়েছে। যেখানে বিদ্যুতের দাম কমানোর কথা, সেখানে আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসায় এখন বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে বাড়বে ৩৫ পয়সা।’ ‘বিদ্যুতের দাম বাড়ানো শুধু অযৌক্তিক ও গণবিরোধী নয়, ভোটারবিহীন সরকারের লুটপাটনীতির বহিঃপ্রকাশ। গোটা দেশটাকে গিলে খেতেই রক্তচোষা সরকার উন্মত্ত হয়ে পড়েছে। ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজারসহ সমস্ত অর্থনৈতিক খাতকে তিলে তিলে খেয়ে তাদের স্বাদ মেটেনি। তাই বার বার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গরিবের রক্ত পান করাটাই যেন তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য’, বলেন বিএনপির এই নেতা। রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এর আগে গত মার্চে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এর আগে ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ছয় বার এবং খুচরা পর্যায়ে সাত বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। শুধু লুটপাটের জন্যই গরিবের সর্বশেষ সম্বলটুকু আত্মসাৎ করতে সরকার আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ালো।’ ফের বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে খারাপ প্রভাব ফেলবে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বিপাকে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। শিল্প খাতেও পড়বে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব। এমনিতে সরকারের লুটপাট আর ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। এমন সময় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা মানেই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করা। এতে গোটা অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিযোগী মূল্যে শিল্প উৎপাদন সক্ষমতা ব্যাহত হবে। শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলে বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও। বর্তমানে নিত্যপণ্যসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। তার ওপর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির মাশুলও দিতে হবে নিম্ন আয়ের মানুষদের। কৃষি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে।’ ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতা ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদের লুটপাটে আরো বেশি সুযোগ করে দিতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আসলে জনগণের প্রতি ভোটারবিহীন সরকারের দায়বদ্ধতা নেই বলেই জনগণকে নিষ্পেষণ ও অপমান করতে এই দাম বৃদ্ধি। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় বাংলাদেশে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও কমার কথা। কিন্তু বিদ্যুতের দাম না কমিয়ে উল্টো বাড়ানো নজিরবিহীন এবং গণবিরোধী।’ বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির জন্য কুইক রেন্টাল প্রকল্পকে দায়ী করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এসব প্রকল্পের পেছনে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের আত্মীয়স্বজন। এদের লুটপাটের আরো বেশি সুযোগ করে দিতেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।’ বিদ্যূতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে এ ‘গণবিরোধী’ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ নভেম্বর ২০১৭/রেজা/রফিক