রাজনীতি

বিলবোর্ডে ছবির প্রদর্শনী বিজয়ের চেতনা নয় : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিজয়ের মাসে ব্যানার-বিলবোর্ডে রঙ-বেরংয়ের ছবি ছাপিয়ে বিজয় উদযাপন করা যায় না। বিলবোর্ডে ছবির প্রদর্শনী বিজয়ের চেতনা নয়। রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বিজয়ের মাসের ভাবগাম্ভীর্য, সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য দেশবাসী ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই বিজয় আমাদের চেতনার। এই বিজয় আমাদের গৌরবের, এই বিজয় আমাদের স্বাধীনতার পুষ্পিত আদর্শের। বিজয়ের মাসে, বিলবোর্ডে ছবির প্রদর্শনী বিজয়ের চেতনা নয়। বিজয়ের আদর্শ নয়। ব্যানার-বিলবোর্ড দিয়ে প্রসাধনীর মতো রঙ-বেরংয়ের ছবি ছাপিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন করা যায় না। বিজয় দিবসে বিজয় চেতনাকে ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পতাকা উচিয়ে ধরতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজকে যারা বিজয়ের বিরুদ্ধে এবং নায়কের বিরুদ্ধে খলনায়ককে উপস্থাপন করে তারা বিজয়ের আদর্শ থেকে লক্ষ্যচ্যূত হয়ে গেছে। যারা বিজয় দিবস মানে কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে মানে না তারা বিজয়ের আদর্শে আছে আমরা এটা মনে করি না। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ মানি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের নেতা বঙ্গবন্ধুকে মানি না, এরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয়।’ একাত্তরে অনেকে ফ্রিডম ফাইটার বাই অ্যাকসিডেন্ট বা দুর্ঘটনাক্রমে হয়ে গেছে দাবি করে তিনি আরো বলেন, ‘তারাই আজ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বিকৃত করছে, মিথ্যাচার করছে। স্বাধীনতার আদর্শ নিয়ে যারা কানামাছি খেলে ইতহিাসকে বিকৃত ও মিথ্যাচার করে তারা এই জাতির সবচেয়ে নিকৃষ্টতম অংশ। এসব ইতিহাস বিকৃতকারী, অপশক্তি ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বাঙালির আস্থা বিশ্বাসের নির্ভরযোগ্য ঠিকানা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিরোধ করতে হবে। বিদেশে জিয়া পরিবারের দুর্নীতি ও টাকা পাচার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বিএনপি বিরূপ ও অশালীন প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছে। তাদের গাত্রদাহ শুরু গেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি দুদককে আহ্বান জানিয়েছি। দুদক অবশ্যই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করবে। শূণ্যের উপর তো তদন্ত হয় না। তাই দুদক অভিযোগ পেলেই তদন্ত করবে। এটা যেহেতু রাজনৈতিক অঙ্গনে এসে গেছে। প্রধানমন্ত্রী যেসব কথা বলেছেন, সে বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত দুদককে অবশ্যই খোঁজ খবর নিতে হবে। এটা আমাদের দায়িত্ব। দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে যে কথা বের হয় তিনি তো না জেনে, না শুনে অন্ধকারে ঢিল ছোড়েননি। কারণ, বিএনপির দুর্নীতির ইতিহাস সবাই জানে।’ এফবিআই’র তদন্তে তারেক রহমানের দুর্নীতি প্রমাণের বিষয় উল্লেখ করে কাদের বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের আদালতে প্রমাণিত হয়েছে এবং এফবিআই বাংলাদেশের আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে এ সত্য গোপন রেখে আপনার কি লাভ? এখন গাত্রদাহ! ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দেরে। ফান্দে পড়ে গেছে। চোরের মায়ের বড় গলা। দুর্নীতির দুর্গন্ধ আবারো ছড়িয়ে পড়েছে। সত্য কোনদিন চাপা থাকে না। ওই ৩০০ স্যুটকেস কল্পকাহিনী নয়, দিবালোকের মতো সত্য। সৌদি আরবে যেতে এয়ারপোর্ট দিয়ে ৩০০ স্যুটকেস পাচার! ভিতরে কি ১২ মিলিয়ন ডলার ছিল? এবস ঘটনা ভুলে যাইনি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘কাজেই এ নিয়ে যতই ঘাঁটাঘাটি করবেন, যতই ময়লা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করবেন, ততই দুর্গন্ধ ছড়াবে, আরো দুর্গন্ধ ছড়াবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘গণতন্ত্র গেল গেল বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে মায়া কান্না কাঁদছেন। আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলবেন না। আপনাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।’ মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা অভিনেত্রী শমী কাওসার, সাংবাদিক হারুন হাবীব। সভা পরিচালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ডিসেম্বর ২০১৭/নৃপেন/শাহনেওয়াজ