রাজনীতি

খালেদাকে ঠেকানোর আহ্বান ইনুর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতির খলনায়িকা উল্লেখ করে তাকে আগামী নির্বাচনে ঠেকানোর জন্য চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময়  সংগঠনটির সভাপতি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, জোটের নেতা অভিনয়শিল্পী আজিজুল হাকিম, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, কণ্ঠশিল্পি শুভ্রদেব উপস্থিত ছিলেন। জোট নেতাদের উদ্দেশ্যে ইনু বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে ঠেকানোর দায়িত্ব আপনাদের। চলচ্চিত্র, গান, গল্পের মাধ্যমে তাদের দুষ্কর্ম এমনভাবে তুলে ধরতে হবে যাতে বিএনপি-জামায়াত আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। কারণ, তিনি (খালেদা) হচ্ছেন বাংলাদেশের রাজনীতির খলনায়িকা। সিনেমার খল অভিনেতারা কখনও জেতেন না। রাজনীতির খলনায়িকা হয়ে তিনিও ক্ষমতায় যেতে চাইবেন কিন্তু খালেদা জিততে পারবেন না।’ জাসদ সভাপতি বলেন, ‘সংবিধানের মূল চার নীতি এবং অন্যান্য অনুচ্ছেদের যে নির্দেশনা রয়েছে তার ভিত্তিতে আমাদের ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সম্প্রচারের বিশাল জগতটা জড়িয়ে আছে, সেহেতু সেখানে চার নীতিকে রক্ষা করে কীভাবে সম্প্রচার হচ্ছে তা দেখার দায়িত্ব আমাদের।’ বিএনপি সংবিধানের মূল চার নীতি মানে না উল্লেখ করে ইনু বলেন, ‘বিএনপি ও খালেদা জিয়া যতক্ষণ পর্যন্ত ঘোষণা দিয়ে এই চারটি বিষয় না মানছেন ততক্ষণ পর্যন্ত তারা বাংলাদেশ, রাষ্ট্র, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতির মহা শত্রু। আমি মনে করি সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। যারা এসব মানে না তাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে থাকার কোনো অধিকার নেই, তাদেরকে চিরদিনের জন্য ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে। এ চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করব সাংস্কৃতিকর্মীরা সেই জায়গায় কাজ করবেন।’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যেন কখনও আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের রক্তাক্ত পথে পরিচালিত না হয়। এই জায়গায় আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। বাংলাদেশ যেন আর হোঁচট না খায়।’ ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের পথেই উত্তরোত্তর এগিয়ে যাবে তার একটা গ্যারান্টি দরকার। সেই গ্যারান্টি অর্জন করতে হলে জঙ্গি দমনের যে যুদ্ধে শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং রাজাকার সরকার আর নয়, সেটা নিশ্চিত করতে সেই যুদ্ধে আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ দরকার’, বলেন ইনু। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ জঙ্গিমুক্ত হবে কিন্তু বাংলাদেশকে যদি মানবিক করতে হয় তাহলে সাংস্কৃতিক কর্মীরা করবেন। বাংলাদেশ যদি অসাম্প্রদায়িক না হয়, কেবল গণতান্ত্রিক হয় তাহলে বাংলাদেশ আবার হোঁচট খাবে। সুতরাং আমরা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশও চাই, যেখানে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী হাত ধরাধরি করে কাজ করবে।’ মত বিনিময় সভায় সংগঠনটির নেতারা মন্ত্রীর কাছে দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। এ বিষয়ে ইনু বলেন, ‘আমরা কেউ সংবিধানের ঊর্ধ্বে নই। সংবিধানের চার নীতি মেনেই দেশ পরিচালনা করছি। ফলে সংবিধান মেনেই আপনাদের দাবি-দাওয়া পূরণের চেষ্টা করব।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্কে সীমাবদ্ধ নেই। সাম্প্রদায়িকতার শেঁকড় উপড়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে। গণতন্ত্র রক্ষা, একে বিকশিত ও প্রসারিত করা বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।’ রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ডিসেম্বর ২০১৭/নঈমুদ্দীন/শাহনেওয়াজ