রাজনীতি

সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে বাঁকা করতে হবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আলোচনার প্রস্তাবে সায় না দিলে আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করার কথা বলেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি বলেন, ‘সোজা আঙুলে তো ঘি ওঠে না। তাহলে একটু বাঁকা করি। আন্দোলন করব না, এমন তো বলি নাই। আন্দোলন করব না- এই প্রতিশ্রুতিও তো আমরা দেই নাই। আন্দোলন আমরা আছি। সেটি কোন পথে কখন কীভাবে নিয়ে যাব সেটি আমাদের নেতৃবৃন্দের দায়িত্ব।’ ‘সুতরাং আমার মনে হয় আমাদের কৌশল চলবে না। আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক রাখতে হবে এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণ ও নিজেদের সংগঠিত করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সরকারকে বলতে চাই, মামলার যে কৌশল নিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন নিয়ে হয়রানি করছেন। তাকে জেল দেবেন। তারপর আবারো জঘন্যতম নির্বাচন করবেন?’ ‘পরিষ্কার জেনে রাখুন, বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন খালেদা জিয়া ব্যতীত হবে না। আর আপনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অধীনেও বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ২০১৪ সাল আর রিপিট হবে না। আগামী নির্বাচন নির্বাচনের মতো করতে হবে। জনগণের ভোট ডাকাতি করার সেই সাধ্য-সামর্থ্য নেই। আর এটা জনগণ হতে দেবে না।’ ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেনসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘তারা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এই নির্বাচন করবে। কিন্তু পরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে জানল যে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে। আদালতকে ব্যবহার করে তা স্থগিত করে দিলো।’ সরকার ও নির্বাচন কমিশন যুক্তি করেই ফাঁদে ফেলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আইনের যে দুর্বলতা ছিল সেটি তো নির্বাচন কমিশনের জানার কথা। এই দুর্বলতা জানা সত্ত্বেও যেহেতু তারা নির্বাচন ঘোষণা করেছে, তার মানে এর মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে তারা প্রতারণা করেছে। আর তা না হলে বলতে হবে, এই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন আয়োজনের যোগ্য না। তাই এই কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।’ ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে খালেদা জিয়া জেলে যাবেন’ বলে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গার বক্তব্য তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, ‘কে কখন জেলে যাবে বা কবরে যাবে এটা তো বলা যায় না। এটা যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই জানেন। এমনও হতে পারে আমরা জেলে যাওয়ার আগে আপনারা কবরে গেছেন। আবার এও হতে পারে আমরা কবরে যাওয়ার আগে আপনারা জেলে গেছেন।’ তিনি বলেন, ‘যে মামলা আদালতে চলমান। সে সম্পর্কে মন্তব্য করা যায়। সরকারের মন্ত্রীরা যখন এভাবে কথা বলেন তখন বলতে হয়, রায় আদালত দেবে না, রায় দেবে সরকার। সরকারের প্রধানমন্ত্রী রায় দেবেন। সুতরাং ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’ সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সী বজলুল বাছিদ আঞ্জু প্রমুখ। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জানুয়ারি ২০১৮/রেজা/মুশফিক