রাজনীতি

‘নির্বাচনে আসেন, দফা দিয়ে কিছু হবে না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, সংসদ নির্বাচনে আসেন, না এলে এসব দফা দিয়ে কিছু হবে না। যদি নির্বাচন না আসেন তাহলে আপনাদের সব দফাই রফা হয়ে যাবে। সোমবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কর্মী সম্মেলন ও সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এবার আমরা খালি মাঠে গোল দিতে চাই না। খেলেই গোল দিতে চাই। দফা একটাই, নির্বাচন হবে। এক দফা এক দাবি জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। আগামী নির্বাচনই বিএনপির জন্য শেষ সুযোগ। যদি অস্তিত্ব রাখতে হয় তাহলে নির্বাচনে আসুন। জামাতের কথায় নির্বাচনে না এলে অস্তিত্ব থাকবে না, বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাগজে থাকবে বিএনপি কিন্তু অস্তিত্ব থাকবে না। ‘সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচনের বিকল্প নির্বাচন। নির্বাচনে জনগণের রায় মেনে নেবো। নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। নির্বাচনের সময় প্রশাসনসহ সকল সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। স্বাধীনভাবে কাজ করবে নির্বাচন কমিশন –বললেন আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। জাতীয় ঐক্যের সমালোচনা করে নাসিম বলেন, রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়া, গণবিচ্ছিন্ন তথা হতাশাগ্রস্থ কতিপয় সুবিধাবদীদের নিয়ে কথিত জাতীয় ঐক্য হয়েছে। এই ঐক্য আগামী নির্বাচনে কোন প্রভাব ফেলবে না। জাতীয় ঐক্যের নামে কোন প্রকার বিশৃংখলাকেও প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে চৌদ্দদলের সমন্বয়কারি বলেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। যে কোন ষড়যন্ত্র দেশের জনগন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, যারা জঙ্গিবাদী অপশক্তির সাথে আঁতাত করে এদেশের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ ধ্বংসের মাধ্যমে এদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল, পেট্টোলবোমা মেরে অসংখ্য নিরীহ মানব সন্তানকে হত্যা করেছিল, যারা বিশ্ব অঙ্গনে এদেশকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে চিত্রিত করতে চেয়েছিল, তাদের সাথে ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এরা কি করতে চায় তা এদেশের মানুষ খুব ভালভাবেই জানে। তিনি আসন্ন নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষীয় সকল শক্তিকে সম্মিলিত ঐক্যের দূর্ভেদ্য প্রাচীর গড়ে তুলে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার উদাত্ত আহ্বান জানান। ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান পীরে তরিকত আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শায়খ খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও জাসদের সেক্রেটারি জেনারেল নাজমুল হক প্রধান এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন ফ্রন্টের মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। দলের যুগ্ম মহাসচিব এম সোলায়মান ফরিদের পরিচালনায় সংলাপে দলের ভাইস চেয়ারম্যান পীর সৈয়দ নাছেরুল হক চিশতী, অধ্যক্ষ আল্লামা এস. এম ফরিদউদ্দীন, অধ্যক্ষ কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান, খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, আল্লামা মোশাররফ হোসাইন হেলালী, সাংগঠনিক সচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অর্থ সচিব অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহীদ রিজভী, মুহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, মুহাম্মদ মনির হোসাইন, নাঈম উদ্দীন, এস এম গোলাম হায়দার হাসিব, খোরশেদ আলম উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বিশ্ব দরবারে এদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটকে জয়ী করতে সবার প্রতি আহবান জানান তিনি। ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ বাহাদুর শাহ মোজদ্দেদি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় চেতনা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধকে নিঃশর্তভাবে ধারণ করে ইসলামের শ্বাশত আদর্শের সমন্বয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এদেশে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচনী জোটের অধীনে ইসলামিক ফ্রন্ট আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।’ তিনি জোটের কাছে ২০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান। ফ্রন্টের মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেন, দেশের স্বার্থে ইসলামিক ফ্রন্ট আওয়ামী লীগের সাথে আছে। অতীতে যুগপৎ আন্দোলন-সংগ্রামেও ছিল। ২০০৮ সালের দশম নির্বাচনে মহাজোটের অন্যতম শরীক দল হিসেবে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে ইসলামিক ফ্রন্ট ভূমিকা রাখে। আগামীতেও যে কোন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব। রাইজিংবিডি/ঢাকা/ ১ অক্টোবর ২০১৮/নঈমুদ্দীন/এনএ