রাজনীতি

সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন : বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সংলাপ নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল সরকারের ‘একগুয়েমী মনোভাবে’ তা বিলীন হয়ে গেছে বলে মনে করছে বিএনপি। দলটির বলছে, সংলাপ শেষে ৭ দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেওয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারি জোটের সংলাপে সরকারের মনোভাব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অশনি সংকেত। সংলাপে মানুষের মনে যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে।’ ‘সংলাপ শেষে ৭ দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেওয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণুতার শিক্ষা কখনোই গ্রহণ করেনি। ক্ষমতা-স্বার্থের আধিপত্য বজায় রাখতে তারা জনগণকেই ভয় পাচ্ছে। জনগণের মুন্ডুপাতই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্য নীতি’, বলেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করা মানে তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতি বাস্তবায়ন করা। সরকার অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকলে মাথা উঁচু করে সাত দফা দাবি রাজপথেই আদায় করতে হবে। দুর্জয় সাহস নিয়ে মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে।’ প্রধানমন্ত্রী সংলাপের ভাষণে রাজনৈতিক মামলায় কারা আছেন তাদের তালিকা চাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, ‘তার দশ বছরের শাসনামলে বিরোধীদলের কাদের নামে মামলা দিয়ে বারবার কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে সেটি কী প্রধানমন্ত্রীর অজানা? গতকাল সংলাপ শেষ হওয়ার পরই আমরা দেখলাম-টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ ইথেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে পুলিশী শক্তির ব্যবহার ছাড়া আওয়ামী জোট সরকারের আর কোনো ভিত্তি নেই।’ তিনি বলেন, ‘সংলাপের জিগির তুলে একদিকে জনগণকে দেখাচ্ছে তারা কত আন্তরিক, অন্যদিকে সমানতালে নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতা অব্যাহত রেখেছে।’ জাতীয় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাশূন্য করে একতরফা নির্বাচনের নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের ক্রোধের শিকার বেগম জিয়া এবং তার সন্তান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই গণবিচ্ছিন্ন পরনির্ভরশীল আওয়ামী সরকার জিয়া পরিবারকে ধ্বংসের যে মানচিত্র করেছে সেই অঙ্কিত নকশানুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে।’ ‘পরিস্কারভাবে বলে দিতে চাই-যতদিন পর্যন্ত একজন জাতীয়তাবাদী কর্মী জীবিত থাকবেন ততদিন পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা যাবে না।’ খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আত্মঘাতি হবে জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশকে গণতন্ত্রমূখী করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আর নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন করা হবে মৃত্যুকুপে ঝাঁপ দেওয়া। যে সরকার জনমতকে পাত্তা দেয় না সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা বোকার স্বর্গে বাস করা।’ সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ নভেম্বর ২০১৮/রেজা/সাইফ