রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই থাকবেন এরশাদ-রওশন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : অতীতের মতো সামনের দিনে সুখে-দুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সম্মিলিত জাতীয় জোট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে সংলাপে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এ প্রতিশ্রুতি দেন জাপার দুই শীর্ষ নেতা। তেমন কোনো এজেন্ডা না থাকায় জাতীয় পার্টি ও সম্মিলিত জাতীয় জোটের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপ মূলত আপ্যায়ন অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। আগে আসন নিয়ে দরকষাকষির কথা জানালেও সংলাপে এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। নিজের মামলা-মোকদ্দমা নিয়েও কোনো কথা বলেননি তিনি। সংলাপকালে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া লিখিত বক্তব্য দেন জাপার চেয়ারম্যান। পরে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কথা বলেন বিরোধী দলীয় নেতা ও জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। সংলাপে অংশ নেওয়া জাপার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। সূত্র জানায়, একসঙ্গে থাকার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, আমাদের কোনো দাবি-দাওয়া নেই। আপনার সাক্ষাতই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আপনার নেতৃত্বে আমরা সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আমরা অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও একসঙ্গে থাকতে চাই। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সুরেই কথা বলেন রওশন এরশাদও। তিনি বলেন, সুখে-দুখে আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। এরশাদ ও রওশনের কথা মন দিয়ে শোনেন প্রধানমন্ত্রী। জবাবে তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় জাতীয় পার্টি আমাদের সঙ্গে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এ সময় তিনি গতবারের আসন ভাগাভাগি নিয়েও কথা বলেন। এরশাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতবার আপনারা ভুল না করলে আরো বেশি আসন পেতেন। এবার আসন বণ্টন নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। সময়মতো সবকিছু ঠিক করা হবে।  সংলাপ শেষে সম্মিলিত জাতীয় জোটের নেতাদের আপ্যায়ন করানো হয়। বিভিন্ন পদের খাবার পরিবেশন করা হয়। রাত সোয়া ৯টার দিকে গণভবন থেকে বেরিয়ে আসেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ অন্য নেতারা। রাত ১০টার পরে এরশাদের বনানীর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি। এ সময় সম্মিলিত জাতীয় জোটের শরিক ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান, মহাসচিব এম এ মতিন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক, ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নসর ওয়াহেদ ফারুক, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এস এম ফয়সল চিশতী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণভবনে যান এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ও জোটের শরিক দলগুলোর ৩৩ নেতা। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সংলাপে অংশ নেন দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, দলের মহাসচিব ও জোটের মুখপাত্র এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, এম এ ছাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, আলহাজ সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম এমপি, মজিবুল হক চুন্নু এমপি, সালমা ইসলাম এমপি, সুনীল শুভরায়, এস এম ফয়সল চিশতী, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মসিউর রহমান রাঙা এমপি, সোলায়মান আলম শেঠ, আতিকুর রহমান আতিক, মেজর (অব.) খালেদ আক্তার, এ টি ইউ তাজ রহমান, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি ও নুরুল ইসলাম ওমর এমপি। সম্মিলিত জাতীয় জোটের পক্ষে শরিক দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান, মহাসচিব এম এ মতিন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক, যুগ্ম মহাসচিব জালাল আহমেদ, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক, বিএনএর চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি সংলাপে অংশ নেন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ নভেম্বর ২০১৮/নঈমুদ্দীন/রফিক