রাজনীতি

আসাম নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই: কাদের

‌জ্যেষ্ঠ প্র‌তিবেদক : আসামের অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন  আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডি‌তে আওয়ামী লীগ সভাপ‌তি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

আসামের অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে সরকার কি ভাবছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা এখানে আসাম নিয়ে বিচার করছি না সেন্ট্রালি ভারতের যে সিদ্ধান্ত সেই সিদ্ধান্তে। আমাদের সাথে তাদের যে চেইন, ইন্টারাকশান সেটা হচ্ছে যাদেরকে স্টেটলেস করা হয়েছে আগামী চার মাসে তাদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। আমরা সাধারণভাবে জানি একাত্তুরের পর বাংলাদেশের কোনো লোক ভারতে যায়নি বা মাইগ্রেট করেনি।’

‘এ নিয়ে আমাদের তারা আশ্বস্ত করেছে, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো বিষয় এখনো পর্যন্ত নেই। কারণ লিগ্যাল  প্রসেস কমপ্লিট করে সিদ্ধান্ত আকারে আসতে আরো সময় নেবে। সে পর্যন্ত কি দাঁড়ায় সেটা আমাদের চিন্তা-ভাবনা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তি‌নি ব‌লেন, ‘ওখানে যাদের স্টেটলেস করা হয়েছে তার ৬০ ভাগই হিন্দু আর মুসলমান ৪০ ভাগ। কাজেই ওখানের বিষয়টা আর রোহিঙ্গা বিষয়টা এক করে দেখার বিষয় না। ওরা তো ভারতের নাগরিক আর এদেরকে এখনই ট্রাইডাউট করবে এমন সিদ্ধান্ত ভারত সরকার বলেনি। কাজেই আমরা আগেভাগে কেন বিষয়টা নিয়ে অহেতুক উদ্বেগের মধ্যে থাকব।’

রোহিঙ্গার পরে আসামের এমন উদ্যোগকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘আমার মনে হয় রোহিঙ্গা ইস্যুর সাথে এর সম্পর্ক নেই। রোহিঙ্গাদের বিষয়টা হচ্ছে মিয়ানমার তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছে, তারা বাংলাদেশ ভূখণ্ডে আছে এবং সেটাও একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। আমরা এটা মোকাবিলা করছি। এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর প্রেসার দেয়ার যত প্রকার উপায় আছে সব ধরনের ওয়ে, সব পথেই আমরা অগ্রসর করছি।’

‘আমি মনে করছি না আমাদের ডিপ্লোমেসি ফেল করেছে। অনেক সময় অনেক কৌশলও আছে দুপা এগিয়ে পেছাতে হয়, সেরকমও হতে পারে। আমাদের কূটনৈতিক প্রয়াস আরো জোরদার হবে। মিয়ানমারের ওপর চাপ আরো জোরদার হবে এবং অব্যাহত থাকবে।’  

চলমান সময়ে আসন্ন কয়েকটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ৭ তারিখে রংপুর উপ-নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে। এছাড়া  ৭টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা এবং ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন রংপুর উপ-নির্বাচনের পরপরই  হবে। মনোনয়ন বোর্ড এই নির্বাচনের প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব এবং ঘোষণা করব।’

তিনি বলেন, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর আমাদের পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আমাদের  সাংগঠনিক রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ের পর আমরা সাংগঠনিক সফরে যাব।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনো কোনো মিডিয়ায় দেখলাম আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। আমি বলব শোকের মাসে আমাদের ওয়ার্ড পর্যন্ত পার্টির কার্যক্রম চলে। একটা দিনের জন্যও বন্ধ হয় না। সভা সমাবেশ প্রতিদিনই লেগেই আছে। বরং আগস্ট মাসে আমাদের কর্মসূচি আরো বেশি করে চলমান থাকে। নেতা-কর্মীরা আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে কর্মসূচিগুলো পালন করে।

বর্তমান কমিটির মেয়াদে একটি জেলা বাদে অন্য কোন জেলায় সম্মেলন সম্পন্ন করতে পারেনি- এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আমাদের যেসব জায়গা বা শাখাগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ, এসব ব্যাপারে আগামী ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা হবে। যেসব বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে, সমস্যা আছে সেসব বিষয়ে ওয়ার্কিং কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে সম্মেলন সংক্রান্ত বা কোথায় কোনো সাংগঠনিক অচলবস্থা থাকলে এসব বিষয়গুলো আলাপ আলোচনা হবে এবং সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।

সম্মেলন করার জন্য বর্তমান কমিটি প্রস্তুত কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সম্মেলন করতে প্রস্তুত। আমাদের নেত্রী যখনই সিদ্ধান্ত দেবেন তখনই আমরা সম্মেলন করব।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মেজবাউদ্দিন সিরাজ, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/রেজা/সাইফ