রাজনীতি

ঢাকা-৫ উপনির্বাচন: বিরামহীন প্রচারণায় আ.লীগ

ঢাকা-৫ উপনির্বাচনে আর মাত্র বাকী ১০দিন। ভোট সামনে রেখে দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে প্রতিদিন বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি প্রচারণায় অংশ নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তারা। নির্বাচনী এলাকা ছেয়ে গেছে দলীয় প্রার্থীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে টানানো ব্যানার-ফেস্টুনে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে করা হয়েছে নির্বাচনী ক্যাম্প। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ। ভোটারদের কাছে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করছেন তারা।

নৌকার প্রতীকের প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম মনু রাইজিংবিডিকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের সব ধরনের বিধি-নিষেধ এবং করোনা প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছি। 

ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, গত কয়েকবছরে দেশে বেশ উন্নয়ন হয়েছে। ৭৫’পরবর্তী কোনো সরকারের আমলে এমন উন্নয়ন মানুষ দেখেনি। গত নির্বাচনে মানুষ যেভাবে নৌকাকে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন ঢাকা-৫ উপ নির্বাচনেও তারা নৌকার পক্ষে আস্থা রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নৌকার প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর পক্ষে দিন-রাত সমান তালে চলছে মিছিল, মিটিং, উঠান বৈঠক, আলোচনা-মতবিনিময় সভা। ভোটারদের মন জয় করতে বাড়ি-দোকানপাটে গিয়েও ভোট চাইছেন আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতারা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি প্রার্থী নিজেও ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।  

এদিকে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ওয়ার্ডভিত্তিক পৃথক পৃথক কমিটি করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে নৌকার প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর পক্ষে প্রচার-প্রচারণার মাত্রা তত বেড়েই চলেছে। নির্বাচনী প্রচারণার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন এলাকায় সীমিত আকারে পথসভাও করছেন কাজী মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্বাচনী প্রচারণায় যে সব পথসভার আয়োজন থাকছে সেখানে সামাজিক দূরত্ব আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন করতে আমি আহ্বান জানিয়েছি। কোনো ভাবেই যাতে আচরণ বিধি লঙ্ঘন না হয় সেই ব্যাপারে আমি খুব সতর্ক।’

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। কিন্তু প্রতিপক্ষ বিএনপির প্রার্থী উসকানিমূলক বক্তব্য এবং মিথ্যাচার করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করছে।’

'তারা প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেয় না। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে মিডিয়ার সামনে কথা বলে আর গণসংযোগে বাধার অভিযোগ তোলে। প্রকৃতএক্ষ তাদের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ।’

এ সম্পর্কে কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্নাও প্রায় অভিন্ন কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনী এলাকায় কোথায়ও কোনো ধরনের সমস্যা হলে বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের মিটিং মিছিল ও গণসংযোগে দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে প্রায়োজন পাহারা বসিয়ে নিরাপত্তা দেবো। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের মিথ্যাচার করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ।

ধারাবাহিক নির্বাচনের অংশ হিসেবে সোমবারও দিনব্যাপী বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন নেতাকর্মীরা। ভাঙাপ্রেসের নিজ বাসভবনে (বেপারি বাড়ি) কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না।

এ সময় তিনি কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সর্তক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির ও দলের সব অঙ্গসহযোগী নেতাকর্মীদের অন্য দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার আহ্বান জানান।

আগামী ১৭ অক্টোবর ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসনটি শূন্য হয়।