নির্বাচন কমিশনকে আওয়ামী লীগের ‘অঙ্গ সংগঠন হিসেবে’ বলায় বিএনপির মহাসচিবের কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তার ওই বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত।
শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে ইনেপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশন আসলে নিরপেক্ষ কোনো সংগঠন নয়। এই প্রতিষ্ঠানটি এখন সরকারের, আওয়ামী লীগের একটা লেজুড়ভিত্তিক একটা সংগঠনে দাঁড়িয়ে গেছে। মূলত তারা তাদের একটা অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
ওই বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে নির্বাচন কমিশন নিয়ে মির্জা ফখরুলের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য শিষ্টাচার বহির্ভূত।
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে বিএনপির প্রার্থীসহ নেতাকর্মীরা নির্বাচনী মাঠে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়েছে তা বিএনপির আমলেও পায়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিএনপি নেতাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে এবং নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি করলেই বিএনপি আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো। তারা নামে মাত্র নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করতে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।
মির্জা ফখরুলের এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেখানে কেন্দ্রে তাদের এজেন্টই ছিল না সেখানে এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ অবান্তর ও ভিত্তিহীন।
এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের নাম ব্যবহার করে কেউ অপকর্মের সাথে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবনিযুক্ত মহিলা বিষয়ক উপকমিটির নেতাদের দলের শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন মেনে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা অনিয়মের সাথে জড়িত তাদের বাদ দিতে হবে। ফ্রি স্টাইলে কোনো কিছুই করা যাবে না।
একজন ব্যক্তি একাধিক কমিটিতে থাকতে পারবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আগে যদি কোনো সহযোগী বা অন্য কোনো কমিটিতে নাম থাকে, তাহলে পদত্যাগ করে আসতে হবে।
৭৫ পরবর্তী সময়ে নারীবান্ধব সরকার হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নারী অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা কঠোর ভূমিকা নিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগে তাদের দরজা চিরকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের দেশের উন্নয়নে নারীবান্ধব কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানান।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কঠোর হুঁশিয়ার করে আবারও বলেন, যারা দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে এবং এখনো মাঠে আসে তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ অবস্থান স্পষ্ট। বিদ্রোহীদের যারা মদদ অথবা উস্কানি দিচ্ছে তাদেরও একই শাস্তি পেতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বিদ্রোহী ও উস্কানীদাতাদের অনতিবিলম্ব সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়ে বলেন, তা না হলে দল কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে মহিলা উপকমিটির নেতারা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।