রাজনীতি

হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি হবে: হানিফ

নারায়ণগঞ্জে রিসোর্টে নারী নিয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে আটকের পর সেখানে যারা ঘরবাড়ি ভাঙচুর এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। 

বুধবার (৭ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঘরবাড়ি দোকানপাট, ভাঙচুরের ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।  

গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রির্সোটে এক নারীকে নিয়ে ওঠেন হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক।  সেখানে জনতা তাকে অবরুদ্ধ করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা ওই রিসোর্টে ভাঙচুর চালায় এবং আওয়ামী লীগের কার্যালয়, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারকর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হক তার নাম ধারী স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে অনৈতিককাজ করতে এসেছিলেন বলেই সাধারণ মানুষ তাকে ধরেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের অফিস, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে এটা কোনোভাবেই সহ্য করা যাবে না। দেশবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এদেরকে জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে।  এই ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান হানিফ।

তিনি বলেন, জান্নাত আরা ঝর্ণা মামুনুল হকের বৈধ স্ত্রী হলে রিসোর্টে তার নাম লিখতো, কিন্তু তার আগের স্ত্রী আমিনা তৈয়্যবাহ নাম লিখছে।  তৈয়্যবাহকে ফোন করে বলেছেন ঝামেলায় পড়ে ঝর্ণাকে স্ত্রী বলেছি সেই রেকর্ডে ফাঁস হয়ে গেছে।  মূলত এরা হলো ধর্ম ব্যবসায়ী, এরা ধর্মভীরু নয়। যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে এরা ধর্ম ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী।

হানিফ বলেন, ধর্মের নাম করে অধর্মের কাজ করে দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করে শেখ হাসিনার উন্নয়ন অর্জনকে ব্যাহত করতে হেফাজত ইসলাম ও তাদের সঙ্গে যারা ধ্বংসের তাণ্ডব চালিয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। আমাদের ওপর যে আঘাত করা হয়েছে, এই আঘাতের প্রতিঘাত করা হবে।

একাত্তরের পরাজিত শক্তি যারা স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারে নাই তারাই এসব ঘটাচ্ছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বিএনপির সঙ্গে এই অপশক্তি মিলে দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করতে উঠেপড়ে লেগেছে। এদেরকে ঘৃণা করতে হবে। সারা দেশে ধর্মের নাম দিয়ে, বিএনপি, জামায়াত এবং হেফাজত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে।

এখন থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী সরকারের পাশে থেকে সব অপশক্তিকে কঠোরভাবে দমন করতে হবে। এজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, বলেন মাহবুব উল আলম হানিফ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, হেফাজত ইসলামীর সঙ্গে মিলে যারা তাণ্ডব চালিয়েছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড লিপ্ত হয়েছে; তাদের তালিকা তৈরি করে খুঁজে বের করে মামলা করা হবে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এদেরকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

যারা তাণ্ডব চালিয়ে তারা দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করে সরকারের উন্নয়ন অব্যাহত করতে চায় মন্তব‌্য করে তিনি বলেন, হেফাজত ইসলাম নামে তারা ছদ্মবেশী রাজনীতি করতে চায়। এই ছদ্মবেশী হামলা কারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।  এদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।

পরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হেফাজতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সেনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের মোগড়াপারা চৌরাস্তা প্রধান কার্যালয়, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি রফিকূল ইসলাম নান্নুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি ও তার শ্বশুরবাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনির বাড়ি পরিদর্শন করেন।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাসিম, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মৃনাল কান্তি দাস, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সামসুল ইসলাম ভুইয়াসহ স্থানীয় নেতারা।