রাজনীতি

বিএনপি জনগণ থেকে বহুদূরে চলে গেছে: হানিফ

বিএনপির রাজনীতি তাদের দলীয় কার্যালয় আর প্রেসক্লাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, দলটি জনগণ থেকে বহুদূরে চলে গেছে।

শুক্রবার (১৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত‌্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।  ‘৯৫ ফাউন্ডেশন কাজিপুর’ নামের একটি সংগঠন এর আয়োজন করে।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি জনগণের কথা বললেও গত দেড় বছরে তারা জনগণের কাছে পৌঁছায়নি। জনগণের কাছে তাদের কোন ত্রাণ তৎপরতা ছিল না। জনগণের দুঃসময়ে ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বিএনপি কখনো মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তারা জনগণ থেকে বহুদূরে চলে গেছে। 

বিএনপির মহাসচিব প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা কথা বলেন অভিযোগ করে তাকে উদ্দেশ‌্য করে হানিফ বলেন, মিথ্যা কথা যে আপনি এত চমৎকারভাবে বলতে পারেন, এতে ওনার কথা শুনে আমি মাঝে মধ্যে বিভ্রান্ত হয়ে যাই। মিথ্যা বলার পারদর্শিতার জন্য তাকে নিঃসন্দেহে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে।

মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, আপনি অন্যদের নির্যাতনের কথা বলেন। কিন্তু আপনি কি ভুলে গেছেন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে আপনারা কীভাবে আপনাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে নির্যাতন করেছেন আওয়ামী লীগের ওপর। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে শুধু হত্যা নয়, আজকে যার স্মরণ সভায় এসেছি, নাসিম ভাই, যিনি মন্ত্রী ছিলেন, তাকেও আপনারা রাজপথে বারবার নির্যাতন করেছেন, রক্তাক্ত করেছেন। তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আসাদুজ্জামান নূর ও সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো মানুষকে আপনারা রাজপথে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন। এসব কি ভুলে গেছেন?

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বলেন আপনাদের কর্মীদের ওপর আমরা অত্যাচার করি।  আপনারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে গাড়িতে আগুন দেন।  আপনি মিথ্যাচার করে, বিভ্রান্ত করে মানুষকে বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তব্য দিয়ে আবার বলছেন, কথা বলার অধিকার নেই, তাহলে এতক্ষণ রাজপথে দাঁড়িয়ে আপনারা কি করলেন। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, মিথ্যাচার করছেন, অভিযোগ করছেন কই আপনাদের কখনো তো আঘাত করা হয় না। আপনাদের তো বাঁধাও দেওয়া হয় না। 

‘যখন আপনার দলের সন্ত্রাসীরা মানুষের ওপর আক্রমণ করে, ভাঙচুর জ্বালাও-পোড়াও করে, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে কখনো কখনো আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। এর বাইরে তো আপনারা নির্বিঘ্নে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। আমাদের কি সেই কাজ করতে দিয়েছিলেন?’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে হানিফ বলেন, বিএনপির রাজনীতি এখন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলামের কথা শুনে মনে হয় যে উনি বোধ হয় খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের চেয়ারম্যান। ম্যাডাম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা কিন্তু একবারও বলছেন না ওনার পার্টিকুলার এই রোগের জন্য এই দেশেই ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে। তারা বলছে না, অথচ বলছেন মির্জা ফখরুল। 

‘আমাদের দেশে চিকিৎসা সম্ভব না হলে কেউ ভারতে যান, ব্যাংকক যান, সিঙ্গাপুর যান। কিন্তু উনি কোনো দেশে যেতে চান সেটা কি বলেছেন, তা বলেন না। খালেদার চিকিৎসা তাদের কাছে মূখ্য নয়, চিকিৎসা নিয়ে তাদের নাটক করা, স্ট্যান্ডবাজি করা, রাজনীতি করা মূখ্য উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা মোহাম্মদ নাসিমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন, আমরা যদি নাসিম ভাইয়ের মতো সাহসী যোদ্ধা এবং বৈষম্যহীন কর্মীবান্ধব হতে পারি, তাহলে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ সারা জীবন মানুষের আস্থা জয় করে চলতে পারবে। আওয়ামী লীগকে কেউ ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে না।  

স্মরণ সভায় ৯৫ ফাউন্ডেশন কাজিপুরের সভাপতি প্রকৌশলী মো. আবু রায়হানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, নাসিমের পুত্র প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় এমপি, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু প্রমুখ।