রাজনীতি

পদ্মা সেতু উদ্বোধন: যা ভাবছে বিএনপি

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ। আগামী ২৫ জুন সেতুর উদ্বোধন হবে। সেতুর নির্মাণকাজের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের কথার লড়াই চলছে।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের কথা শুনলেই বিএনপির মুখ কালো হয়ে যায়।’

এর জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু জনগণের টাকায় হয়েছে, কারও পকেটের টাকায় হয়নি।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে যেতে পারেন বিএনপি নেতারা।’

এর জবাবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু জনগণের ট্যাক্সের টাকায় নির্মাণ হয়েছে।’

এসব রাজনৈতিক বাগযুদ্ধের মাঝেও ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় বিএনপি নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে।’

এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুঞ্জনের পাশাপাশি অনেকের মধ্যে কৌতূহল হচ্ছে- পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলে বিএনপি নেতারা সেখানে যাবেন কি না।

এ ব্যাপারে বিএনপির নীতি নির্ধারক পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়ে এখনো দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেননি তারা। আমন্ত্রণ পেলে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা সময়মতো জানানো হবে।

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিএনপি থাকুক এটা সরকারই চায় না। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে সরকারের তরফ থেকেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির অংশ নেওয়ার পরিবেশ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

আমন্ত্রণ পেলে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির যোগ দেওয়া উচিত হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ বলেন, ‘দলীয় নয় কিন্তু জাতীয় সকল ইস্যুতে বিএনপি থাকতে চায়। সেজন্য সরকারকেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কিন্তু সরকার সেই পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি বরং নষ্ট করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য দিয়েছেন, তাতে বুঝা যায়- সরকার চায় না বিএনপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকুক।’

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘আগে আমন্ত্রণ আসুক। তারপর দেখা যাবে। দলীয় সিদ্ধান্ত মতে যা হয়, সেটা সময় মতো দেশবাসী জানবে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। এটা তো কারো একক সিদ্ধান্ত নয়, পার্টির সিদ্ধান্ত মোতাবেক হবে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এটা আসলে আমাদের দলের বিষয়। সরকার আমন্ত্রণ জানালে দল সিদ্ধান্ত নেবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যা হওয়ার হবে। এখনও তো সময় আছে, দল নিশ্চয়ই সময়মতো প্রতিক্রিয়া জানাবে।’