রাজনীতি

ষড়যন্ত্র না করে নির্বাচনে আসুন, বিএনপিকে ১৪ দল

বিএনপিকে ষড়যন্ত্র বন্ধ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা। তারা বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার আর কোনো সুযোগ নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।

নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছেন, নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করা হলে জনগণকে সাথে নিয়ে ১৪ দল রাজপথে তা প্রতিহত করবে।

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

জোটের নেতারা বলেন, ‘রাজপথ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। ১৪ দল রাজপথে আছে, থাকবে। নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার সময় শেষ। নেতাকর্মীরা সজাগ সচেতন এবং আগামীতে এই ধরনের নৈরাজ্য প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত। কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হলে নেতাকর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না, তা রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বিএনপি পাকিস্তানের প্রেতাত্মা হিসেবে এই দেশে রাজনীতি করছে। আজ সেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে গেছে মির্জা ফখরুলের মাধ্যমে। পাকিস্তানের জয়গানের মধ্য দিয়ে বেড়িয়ে গেছে।’

‘আজ তাদের আন্দোলনের নৈরাজ‌্যর মূল লক্ষ‌্য নির্বাচন নয়। আজকে তাদের মূল লক্ষ্য এ দেশে একটি অরাজনৈতিক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবার ওই পথে ক্ষমতায় যাওয়া যায় কি না, তারই একটি হিসাব- নিকাশ। কিন্তু, সেই হিসাব-নিকাশে অনেক গড়মিল। পদ্মা-মেঘনায় অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ মেনে নিতে পারেনি, যারা এ দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি, আজ তাদের প্রেতাত্মারাই তথাকথিত দল গঠন করে এই দেশে বারবার নৈরাজ্য সৃষ্টি করে অরাজনৈতিক সরকার গঠনের পাঁয়তারা করেছে। বিগত দুই-তিন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন, আপনারা নির্বাচনকে ভয় পান। তাই ছলে বলে কৌশলে সব সময় নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে চান, দূরে সরে আছেন এবং আগামীতেও থাকবেন। এটা আমরা জানি, এটা আমরা বুঝি।’

বিএনপি নেতাদের একাধিক অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘উনারা কেউ বলেন, তত্ত্বাবধায় সরকার; কেউ বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার; কেউ বলেন, জাতীয় সরকার—যার যা খুশি বলেন। একটা সময় হয়ত বলবে, আমাদের সরকার ছাড়া নির্বাচনে করব না। তাদের সরকার যদি হয়, তাহলে তারা নির্বাচন করবে। আর তাদের সরকারের আমলে নির্বাচনের ফলাফল আমরা জানি। এক হুন্ডা, দুই গুণ্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। জিয়াউর রহমানের আমল থেকেই কারচুপি, ভোটের বাক্স হাইজ্যাক—এগুলো আমরা দেখেছি।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বিএনপি বিগত দিনের নির্বাচন নিয়ে প্রহসন করেছে। আজ আবার সেই খেলায় মেতে উঠেছে। তারা আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দিন শেষ হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘সামনে একটা মাত্র পথ খোলা আছে সেটি হচ্ছে নির্বাচন। যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, নির্বাচনে বিশ্বাস করেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে আসুন। শক্তি পরীক্ষার জন্য নির্বাচনে আসুন। যেকোনো ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ১৪ দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।‘

ভূল পথ ত্যাগ করে নির্বাচনে আসার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জেপি মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন হবে, কেউ ঠেকাতে পারেনি, পারবেও না। তাই, নির্বাচনে আসুন। নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে কোনো প্রস্তাব থাকলে দিন।’

আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডরি, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদৎ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।