রাজনীতি

সরকার শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস কর‌ছে: ফখরুল

দেশের পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষা থে‌কে দূ‌রে সরা‌তে এবং ব্যর্থ জাতি তৈরি করতে সরকার এবার শিক্ষাব্যবস্থায় হাত দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে এসব কাজ করে যাচ্ছে। তারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ব্যর্থ করতে এবার শিক্ষাব্যবস্থায় হাত দিয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপা‌রে কেউ কোনও প্রতিবাদ করছে না।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তি‌নি এ মন্তব্য করেন। 

‘অপরিণামদর্শী কারিকুলাম ও মানহীন পাঠ্যপুস্তক: দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধ্বংসের নীলনকশা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বিএনপি। এতে সহযোগিতা করে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।

এ সময় ফখরুল বলেন, এক দেশে দুই রকমের শিক্ষানীতির কার‌ণে যারা বিত্তশালী তারা কেউ নিজেদের ছেলে-মেয়েদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষা দেয় না। সবাই ইংরেজি মাধ্যমে পড়ান। এরপর ছেলে-মেয়েদের বাইরে পাঠিয়ে দেন। দ্বৈত শিক্ষানীতির কার‌ণে যারা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেখা করে তারা দেশের সব বড় জায়গা নিয়ন্ত্রণ করে। আর না হলে বিদেশে চলে যায়। আর যাদের অর্থ নেই তাদের জন্য প্রাইমারি, হাই স্কুল- যেগুলো কোনোরকমে টিকে আছে। 

বাঙালির আলাদা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য-পরিচয় আছে উল্লেখ করে ফখরুল ব‌লেন, বর্তমা‌নে শিশুদের ভুল ও বিকৃত ইতিহাস শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এটি এক‌টি চক্রান্ত এবং এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাইকে জেগে উঠতে হবে। এটা জাতির অস্তিত্বের লড়াই। 

সরকার আমাদের খোলনলচে পাল্টে দিতে চায় মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে সরকার পরিচয়হীন, নতজানু, ব্যর্থ জাতি ও রাষ্ট্রে পরিণত করার কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আমা‌দের দুর্ভাগ্য, এতো বড় ভয়াবহ কাজের আমরা ছাড়া কেউ প্রতিবাদ করছে না। এ ব্যাপা‌রে আমা‌দের সুশীল সমাজের মুখে একটা কথাও বের হচ্ছে না। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সন্তানরা প্রাথমিক শিক্ষা নি‌য়ে সেটাকে পুঁজি করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার মূল ভি‌ত্তি। দুর্ভাগ্যবশত এখনো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। যদিও পাকিস্তান আমলেও এ ধরনের পরীক্ষা ও বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। শুধু বার বার পরীক্ষা ও শিক্ষানীতি হচ্ছে।  

তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকে অজস্র ভুলে ভরা ইতিহাস ও তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। সেগুলোই নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের শেখানো হচ্ছে। যারা কারিকুলাম তৈরি করে, তারা একবারও ভাবে না শিক্ষার্থীরা কী শিখছে? জাতির মূল জায়গা হলো শিক্ষা। আর সেখানেই এবার হাত দিয়েছে সরকার। ভুলে ভরা এসব পাঠ্যবই অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। 

ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. শাহ শামীম আহমেদ, পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী প্রমুখ।