রাজনীতি

বিএনপির নেতৃত্বে নৈতিকতা ও সততার ঘাটতি আছে: হানিফ

বিএনপির নেতৃত্বে শিষ্টাচার, সভ্যতা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সততার ঘাটতি আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, এজন্য দলটি জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারছে না।  

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার জাতীয় সম্মেলন-২০২৩’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, তাদের নেতৃত্ব (তারেক রহমান) সমাজের কাছে আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পারেনি, সে কখনোই জনগণের নেতা হতে পারে না।

এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন অর্জনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অর্থনৈতিক দিয়ে দিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছি। ২০০৯ সালেও আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলারের নিচে, দারিদ্রসীমা ছিল ৬০ শতাংশ। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় আজ প্রায় ৩ হাজার ডলার। দারিদ্র্যসীমা ২০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। আমাদের লক্ষ্য, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা।

হানিফ বলেন, শেখ হাসিনার মেধা, বিচক্ষণতায় আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। উন্নয়নের এ ধারা টেকসই রাখতে হলে আমাদের বর্তমান সমাজে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মানুষকে আদর্শিক, নীতি নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সৎ নাগরিক গড়ে তোলা। কারণ অসৎ জাতি হলে এ উন্নয়ন ধরে রাখতে পারব না।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, উনাদের নেতা তারেক রহমান। তার কোনও সভ্যতা, ভদ্রতা আছে? সভ্যতা সে শেখেনি। যার কারণে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি সেই জাতির পিতার নাম বলার সময় বলে মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সম্মানীয়, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি; নাম বলার সময় বলে হাসিনা। এমন, যেন মনে হয় তার সমবয়সী। অথচ আমরা বেগম খালেদা জিয়া বলে সম্বোধন করি। হত্যা, দুর্নীতির দায়ে কারাগারে তবুও আমরা সম্মান করে বলি। এতেই প্রমাণ হয় তার মধ্যে শিষ্টাচার, ভদ্রতা নেই।

হানিফ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সন্ত্রাসের রাজনীতি করেছে, নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের লাখো নেতাকর্মীকে নির্যাতন করেছে। তাদের মধ্যে কোনও মানবতাবোধ ছিল না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনও গোলটেবিল বৈঠক বা কোনও মেজরের বাঁশির হুইসেলে স্বাধীনতা আসেনি। স্বাধীনতা অনেক কষ্টে, রক্তে পাওয়া।

তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে হবে। আর না হলে রাজাকার, আলবদররা বিভ্রান্ত করার সুযোগ পাবে। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিল।

শিশু-কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দুঃশাসনের প্রতিবাদ করায় বঙ্গবন্ধুকে বার বার কারাবরণ করতে হয়েছে। দেশের জন্য তার আত্মত্যাগ জানতে হবে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা পড়তে হবে।

সমাজ থেকে সভ্যতা-ভব্যতা হারিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই দেশ গড়বে। এদের মধ্যে নৈতিকতা, শিষ্টাচার না থাকলে সমাজ ভালভাবে এগুতে পারবে না।

সম্মেলনে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’র প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশু-কিশোরদের নিয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার করেছেন। একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, হত্যা, ধর্ষণ করেছিল- তাদের বিচার করেছেন।

এছাড়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাহাদুর বেপারী, লিয়াকত সিকদার, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক মীর মোশাররফ হোসেন, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’র উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল ও উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সোবহান প্রমুখ।