রাজনীতি

সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট: আওয়ামী লীগ

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ‘সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট’ বলে অভিহিত করেছেন দলটির নেতারা। তারা বলছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যপূরণে সহায়ক হবে এই বাজেট।  

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত এই বাজেট উপস্থাপন করেন। 

নতুন এই বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে চলতি অর্থবছরের মতোই ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা।

বাজেট প্রতিক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই বাজেট হচ্ছে সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার অভিমুখে যাত্রা সেই যাত্রার প্রথম ধাপ আমরা অতিক্রম করেছি।’

প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাজেট এমনভাবে করা হয়েছে যাতে মানুষের কষ্টটা লাঘব হবে। ক্রয়ক্ষমতা মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার সহায়ক বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতি যখন মন্দা, সে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সময় উপযোগী বাজেট দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, এই বাজেটের মাধ্যমে সেই স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট নগরায়ন এবং স্মার্ট জনগণ গড়ে উঠতে সাহায্য করবে।’

পিছিয়ে পড়া নিম্নবিত্ত মানুষ যাতে সমানতালে এগিয়ে যেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে বাজেট ঘোষণা হয়েছে উল্লেখ করে  নানক আরো বলেন, ‘এই বাজেট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অগ্রসর হতে সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইশতেহারের মাধ্যমে যে ওয়াদা করেছিলেন, এই বাজেট সেই ওয়াদা বাস্তবায়নের অংশ।’

দেশকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বসবাসের উপযোগী একটি স্মার্ট রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার এ বাজেট জাতির কাছে উপস্থাপন করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই বাজেটে দেশের ধনী, গরিব মধ্যবিত্ত সবাই উপকৃত হবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘এবারের বাজেট গণমুখি এবং উন্নয়নের দ্বারা অব্যাহত রেখে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ বাজেটের মাধ্যমে দেশের শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি ও সুরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যপক পরিবর্তন আসবে, যা দেশের সকল শেণ্রী-পেশার মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’

বাজেট পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর দিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে বলে মনে করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস অভিঘাত ও বিশ্বমন্দার যে অভিঘাত হয়েছে, তা থেকে কাটিয়ে ওঠার বাজেট ঘোষণা হয়েছে। এর মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট নগরায়ন এবং উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য কৃষি, খাদ্য, নতুন কর্মসংস্থান সৃজন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ভর্তুকির চাপ সামাল দেওয়াসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই বাজেটে।’ 

উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ২৪ বার বাজেট উত্থাপন করেছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

 

১৯৭২ সালের ৩০ জুন বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বাধীন সরকারের ৭৮৬ কোটি টাকার প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। শেখ হাসিনা নেতৃত্বের সরকার (টানা ১৫ বার) ২০২৩ সালে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।