রাজনীতি

বিএনপি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সহযোগী সংগঠন : আশরাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সহযোগী সংগঠন আখ্যায়িত করে তারা যেন কোনোভাবেই ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

 

রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

 

সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘এরা (বিএনপি) খুনি গোষ্ঠীর দল, জঙ্গিগোষ্ঠীর দল। বাংলাদেশে এরা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, স্বাধীনতার পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ এ সময় বিএনপিকে ‘মৌলবাদী, আইএসআই, তালেবান গোষ্ঠীর দল’ আখ্যায়িত করে তাদের রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।

 

১৭ আগস্ট পালন করা সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিন মুন্সীগঞ্জ ছাড়া একসঙ্গে সব জেলায় ৫০০ স্থানে বোমা হামলা করা হয়েছিল। এটি একটি সিগন্যাল ছিল, সংকেত ছিল; জাতির সামনে। ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠীরা প্রস্তুত। এরা যেকোনো সময় জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে, এমন সংকেত ছিল সেটি।’

 

তৎকালীন সরকারপ্রধান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তিনি জানতেন। শুধু জানতেনই না, যারা বোমা তৈরি করেছিল তাদের পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সহযোগিতাও করেছিলেন। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। আর রাষ্ট্রীয় শক্তি বা সহযোগিতা ছাড়া জঙ্গিদের কোনো রকম ক্ষমতাই ছিল না এ ধরনের হামলা করার।’

 

সৈয়দ আশরাফ আরো বলেন, ‘১৭ আগস্টের ধারাবাহিকতায়ই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়। এই মৌলবাদীরা ইসলামের শত্রু। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া সব সময় এদের উৎসাহিত করেছেন, তাদের আড়াল করার চেষ্টা করেছেন, রাষ্ট্রীয় শক্তির ক্ষমতা দিয়েছেন।’

 

একটি দৈনিক ইংরেজি পত্রিকায় শনিবার প্রকাশিত মার্কিন সাংবাদিক ও লেখক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের লেখা নিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি দাবি করে, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের কোনো রকম সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। এমনকি বিলেতের চ্যানেল-৪ এর অনুষ্ঠানে ফারুক-ডালিমরা জানান, তারা জিয়ার নির্দেশ পালন করেছিলেন। আসলে এরা সবাই বাংলাদেশে আরেকটা পাকিস্তানি শাসন কায়েম করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য এদের, দুর্ভাগ্য জিয়ার। দুই বোন (শেখ হাসিনা-শেখ রেহানা) বাইরে ছিলেন।’

 

বাংলাদেশ এখন সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য নয়- দাবি করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘কিন্তু বেগম জিয়া যদি আবারও কখনো ক্ষমতায় আসেন, তাহলে বাংলাদেশ আবারও সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে।’

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের জন্য ‘কষ্ট হয়, দুঃখ হয়’, মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তিনি ভদ্র মানুষ, তার সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক আলাপ হয়। কীসের আশায়, কীসের লাভে এত দৌড়াদৌড়ি করেন। ওরা (খালেদা জিয়া-তারেক রহমান) তো আপনাকে কিছুই দেবে না। আপনার ঘাড়ে মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। জাহাজের গল্পের মতো- লড়িছ না, তোরে সারেং বানাবো। খালেদা জিয়া থাকবে চেয়ারম্যান, ছেলে ফিরলে হবে মহাসচিব।’

 

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সহসভাপতি মুকুল চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন, শাহে আলম মুরাদ।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ আগস্ট ২০১৪/এনআর/সাইফুল/কমল কর্মকার