গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে রাজধানীর কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাতে গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসাধীন রাশেদ খাঁন জানান, নুরুল হকের অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, তার সমস্ত শরীর রক্তাক্ত।
গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ জানান, আহত নুরকে কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাশেদ খাঁন নিজেও গুরুতর আহত। তিনিও চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গণঅধিকারের আহত নেতাকর্মীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ক্ষতের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন অনেকে। তাদের কারো মাথায় প্যান্ডেজ, কারো পায়ে, কারোবা হাতে।
কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। গণঅধিকারের দাবি, তাদের মিছিলের পেছন থেকে হামলা করেছে জাতীয় পার্টি। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির পাল্টা অভিযোগ, তাদের প্রধান কার্যালয়ে হামলা হয়েছে ওই মিছিল থেকে।
এ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ঢিল ছোড়াছুড়ির একপর্যায়ে কাকরাইল-বিজয়নগরে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন দুই দলের নেতাকর্মীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিতে মাঠে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে দ্বিতীয় দফায় জাপা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। এ সময় জাপা নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে জাপা নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। তখন গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের ঘটনাস্থল ছাড়তে ১০ মিনিট সময় বেঁধে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গণঅধিকারের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল না ছাড়লে তাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নুরুকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন তারা। এমন কি আত্মরক্ষার চেষ্টা করতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার পরও তাকে আঘাত করা হচ্ছে।
এর আগে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের ওপর গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে বলে অভিযোগ করে জড়িতদের বিচার দাবি করেন জাপার মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
রাতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। তাদের হামলায় দলের বেশ কয়েকজন নেতা আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি। এ সময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন মিলন, আলমগীর সিকদার লোটন উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন সন্ধ্যার দিকে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জন্য তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ এবং দলটির নেতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পল্টন জিরো পয়েন্টে সমাবেশ ডাকে গণঅধিকার পরিষদ। এই খবর পেয়ে জাতীয় পার্টির কাকরাইল অফিসে দলের মহাসচিব ব্যারিষ্টার শামীম পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আলমগীর সিকদার লোটনসহ দলটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নেন কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ে যাওয়ার পথে শ্লোগান পাল্টা শ্লোগানে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়।
রমনা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আতিকুল আলম খন্দকর সাংবাদিকদের বলেন, “সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।”