জনগণের রায়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলে পশুপাখি এবং অন্য প্রাণী তথা বাস্তুতন্ত্রের নিরাপত্তায় বিদ্যমান আইনগুলোকে সময়োপযোগী করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বন্য প্রাণীর নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে আইনের চেয়েও মানুষের সচেতনতার ওপর জোর দেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “প্রাণী অধিকারের বিষয়টি শুধু প্রাণীর প্রতি মানবিক দায়িত্বই নয়, বরং জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ, বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষা এবং মানবজাতির সুস্থ ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্যও অত্যাবশ্যক। মানুষ যখন প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়, প্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করে, তখন এটি মানব সমাজের পরিপক্বতা ও উন্নত নৈতিকতার প্রতিফলন ঘটায়।”
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘প্রাণী ও প্রাণের মিলনমেলায়’ লন্ডন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “নানা কারণে একদিকে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে, ঠিক একইভাবে বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনাও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এসব কারণে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল অস্তিত্বসংকটে পড়ছে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেমন গণতন্ত্রের চর্চা বা সুরক্ষা প্রয়োজন, ঠিক একইভাবে প্রাণীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা অপরিহার্য।”
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মানুষের সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে তারেক রহমান বলেন, “সবার মধ্যে এই উপলব্ধি আসতে হবে। কারণ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বন্য প্রাণীর নিরাপত্তার সঙ্গে মানুষের নিরাপত্তাও জড়িত।”
তিনি বলেন, “মানুষের নিজের প্রয়োজনেই প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার, প্রাণীদের আবাস অক্ষত রাখা দরকার।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা যখন প্রাণীর নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলছি, আমার ধারণা এই মুহূর্তে আমাদের অনেকের মনে একটা চিন্তা আসতে পারে, সেটা হলো রাষ্ট্র যখন কখনো কখনো খোদ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তখন আমরা প্রাণীর নিরাপত্তা নিয়ে আলাপ করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, গণতন্ত্রের সঙ্গে মানুষের অধিকারের সম্পর্ক যেমন, বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে পশুপাখি ও বন্য প্রাণীর অধিকারের সম্পর্কও তেমন। সুতরাং রাষ্ট্র, রাজনীতিতে গণতন্ত্র ও সুবিচার প্রতিষ্ঠিত থাকলে বাস্তবিকভাবেই বাস্তুতন্ত্র নিরাপদ থাকে।”
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুল লতিফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান খান মিল্লাত, কবি আবদুল হাই শিকদার, ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান রুম্মন এবং চিত্রনায়িকা আইরিন সুলতানা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আদনান আজাদ।