রাজনীতি

পরিস্থিতি দেখে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা জাপার: শামীম হায়দার

পাতানো নির্বাচনের শঙ্কার মধ্যেই পরিস্থিতি দেখে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে কাকরাইল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ ঘোষণা দেন।  

তবে এজন্য প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে কার্যকর, অস্ত্র উদ্ধার অভিযান, দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তাসহ লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।  

শামীম পাটোয়ারী বলেন, “আমরা নির্বাচনের যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে আমরা শেষপর্যন্ত ভোটে থাকবো কি না। পরিস্থিতি দেখে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। মনোনয়ন ফরম বিক্রিসহ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে।”

বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে শামীম পাটোয়ারী বলেন, ‍“নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা প্রশাসন ও ইসির ওপর বর্তায়। কিন্তু কী দেখলাম, তফসিলের পরে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির ওপর গুলি করা হয়েছে। দেখলাম নওগাঁ আমাদের পার্টি অফিসে কুচক্রিমহল হামলা-ভাঙচুর করেছে।”

“তার মানে পুলিশ প্রশাসন এখনো নিজেদের নিরপেক্ষ ভাবতে পারছে না, মবের ঊর্ধ্বে ভাবতে পারছে না। এ অবস্থায় কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব? আমরা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। পরিস্থিতি দেখে ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নেব,” বলেন তিনি।

‘‘বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত হতাশাজনক, কোনো জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে এত নাজুক পরিস্থিতি ছিল না। ভোটের আগে সবসময় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান হয়েছে, আইনশৃঙ্খলার উন্নতির জন্য কাজ হয়েছে, কিন্তু এবার তেমন কিছু দৃশ্যমান নয়,” যোগ করেন জাপা মহাসচিব।

সরকারের প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচনের বড় অন্তরায় মন্তব্য করে পাটোয়ারী বলেন, “প্রশাসনে বিএনপি-জামায়াতের লোক বসে আছে। এ কারণে আমরা মনে করছি, একটি এক তরফা কিংবা পাতানো নির্বাচন হতে পারে, দিনের ভোট রাতে কিংবা ভোটের পরে ভোট হতে পারে। মিডিয়া-ভোট কিংবা ইলেকশনে ইঞ্জিনিয়ারিংও হতে পারে। নির্বাচনে সকলের মতামতের প্রতিফলন নাও হতে পারে।”

“একজন উপদেষ্টা বলেছেন, প্রশাসনে জামায়াতের লোকজন বসানো হয়েছে,” বলেন পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, ‘‘ইতিহাসকে বিকৃতি করার চেষ্টা চলছে, চব্বিশকে যারা লালন করেছে, তাদের একাত্তরকেও শ্রদ্ধা করতে হবে। একাত্তর বাদ দিয়ে চব্বিশ ধারণ করলে হবে না, বরং একাত্তরের চেতনায় চব্বিশকে ধারণের ধারাবাহিকতা রাখতে হবে।”

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব। তিনি বলেন, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে। নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে হবে।

তিনি বলেন, “আমাদের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়াসহ অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। তাদের ছেড়ে দিতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।”

এসময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজি সাইফুদ্দিন আহমদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, ইকবাল হোসেন তাপস, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, শফিকুল ইসলাম মধু, আমির উদ্দিন আহমেদ ঢালু, আবুল খায়ের, মিজানুর রহমান মিরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।