পজিটিভ বাংলাদেশ

বইপড়ার পুরস্কার পেল সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : বই পড়ে নিজেদের আলোকিত করার প্রত্যয় যাদের বুকে তেমন সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীর পদচারনায় শুক্রবার মুখর ছিল খুলনার সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। ‘আলোকিত মানুষ চাই’ এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে তারা ওই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। মুখে হাসি, চোখে আত্মবিশ্বাস আর হৃদয় ভরা আলো। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচির সদস্য তারা। সারা বছর বই পড়েছে। এরপর মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সাফল্যের জন্য তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও গ্রামীণফোন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রমের আওতায় ২০১৬ সালে খুলনা মহানগরীর ৪১টি স্কুলের প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে মূল্যায়নপর্বে যারা কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে, তাদেরকে পুরস্কার প্রদানের জন্য খুলনার সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে দিনব্যাপী এই পুরস্কার বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। উৎসবে খুলনা মহানগরীর ৪১টি স্কুলের তিন হাজার ৫৪৩ জন শিক্ষার্থীকে দুই পর্বে পুরস্কার দেওয়া হয়। উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথিদের গল্প শুনে তাদের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা বইপড়ার বিষয়ে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। সরকারি ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের পুরস্কার বিজয়ী ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেজাবিন আজমীর পায়েল নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে জানায়, ‘আমি বই পড়ি নিজের আনন্দের জন্য। আজকের পুরস্কার পেয়ে এই আনন্দ বহুগুণে বেড়ে গেছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও গ্রামীণফোনের এই আয়োজন  আমাদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে’। শ্যামলী আক্তার অভিভাবক হিসেবে এসেছিলেন শিরোমণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীর সঙ্গে। স্কুলের টেক্সট বইয়ের চাপেই যখন অনেক শিক্ষার্থী এবং বাবা-মারা উদ্বিগ্ন সেখানে নিজের সন্তানকে অন্যান্য বই পড়তে দেওয়ার ফলে তাদের পড়ালেখায় কি রকম প্রভাব পড়েছিল এই প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, ‘বইপড়া অব্যশ্যই একটি ভাল অভ্যাস। স্কুলের পড়ালেখার পাশাপাশি বই না পড়লে ছাত্রছাত্রীরা অনেক পিছিয়ে থাকবে। এখন সৃজনশীল পদ্ধতির ফলে স্কুলের পাঠ্যবইয়ের বাইরে পড়ার অভ্যাস তাদের সাহায্যও করবে। উৎসবে অতিথিদের মধ্যে প্রাক্তন সচিব আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, লেখক ও নাট্যব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ, খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. ফারুক হোসেন, খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, যুগ্ম সচিব ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, উপসচিব মো. নজরুল ইসলাম, খুলনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার রুহুল আমীন, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আরজুমান, গ্রামীণফোনের খুলনা সার্কেলের প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা মো. রায়হান জহির টুটুল এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক ও উপসচিব শরিফ মো. মাসুদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচির ডেপুটি টিম লিডার (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন। রাইজিংবিডি/খুলনা/২৪ মার্চ ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত