পজিটিভ বাংলাদেশ

শীতকালীন আগাম সবজির নার্সারি: উপকৃত হাজারো কৃষক

প্রস্তুতিটা শ্রাবণের শুরুতেই। উদ্দেশ্য শীতকালীন আগাম সবজি চারা উৎপাদন। তাই বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করে প্রস্তুতকৃত জমিতে উন্নত জাতের বীজ রোপণ করা হয়েছে।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হিসেবে কর্মরত গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ। শীতকালীন আগাম সবজির নার্সারি গড়ে তুলেছেন তিনি।

মৌসুম অনুযায়ী আগাম সবজি চারার উৎপাদন করেন ফারুক আহমেদ। নিজের জমিতে রোপণের পাশাপাশি কৃষকদের কাছে অত‌্যন্ত সুলভমূল্যে বিক্রি করেন তিনি। কৃষকরা তার নার্সারি থেকে চারা কিনে নিজেদের জমিতে রোপণের মাধ্যমে ভাল ফলন পেয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে নার্সারিতে টমেটো, বেগুন, লাউ, পেঁপে, ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা উৎপাদন করেছেন ফারুক আহমেদ। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা তার কাছ থেকে শীতকালীন আগাম সবজির চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জমি প্রস্তুত করে রোপণের পর সময়মতো আগাছা পরিস্কার করে কিছু পরিমাণে সার দিলে দেদারছে ফলন আশা করা যায়। এবার নার্সারিতে প্রায় দুই লাখ টমেটো, বেগুন, লাউ, পেঁপে, ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা উৎপাদন হয়েছে। চারা বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে। অবিক্রিত চারাগুলো নিজের জমিতে রোপণ করবো বলে ঠিক করেছি।’

তিনি জানান, চারা শেষ হয়ে গেলে আবারও নার্সারিতে বীজ রোপণ করবেন। এভাবে বছরজুড়ে আগাম জাতের সবজির চারা উৎপাদন করবেন তিনি। এসব চারা বিক্রি করে নিজে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি আগাম জাতের চারা রোপন করে কয়েক হাজার চাষি স্বাবলম্বীও হয়েছেন।  ফারুক আহমেদ বলেন, ‘কাজের মাধ্যমে সুফল আসবে। তবে লাভের দিকে তাকানোর আগে কৃষকের জন্য চিন্তা করছি। তাই সবজি চারা উৎপাদন অব্যাহত রেখেছি।’

বাহুবলের কৃষক রুস্তম আলী ফারুক আহমেদের নার্সারি থেকে লাউ, টমেটো ও বাঁধাকপির আগাম জাতের চারা সংগ্রহ করেছেন। তিনি জানান, জমি প্রস্তুত করেছেন। ভাল ফলন পেলে আরও জমি প্রস্তুত করে সবজি রোপণ করবেন।

চুনারুঘাটের মিরাশীর বাসিন্দা আব্দুর রহিম, আব্দুল হাই, উত্তর নরপতি হাজী খোর্শেদ আলী, শায়েস্তাগঞ্জের নছরতপুরের সৈয়দ আব্দুর রহিম, বেগমখান চা বাগানের বাবু কুমার রাজবংশি, নবকুমার রাজ বংশিসহ অনেকেই এই নার্সারিটি থেকে উন্নতজাতের টমেটো, লাউ, পেঁপে, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুনসহ শীতকালীন আগাম সবজি চারা সংগ্রহ করছেন। 

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘সবজি চারার নার্সারি করা কঠিন। সেখানে ফারুক আহমেদ সফলতার সাথে সবজি চারার নার্সারি গড়ে লাভবান হয়েছেন। তেমনি এখান থেকে চারা কিনে কৃষকরাও স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তবে শীতকালীন আগাম সবজি চারা উৎপাদন করতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়।’