পজিটিভ বাংলাদেশ

তরমুজ-টমেটো-শসায় রউফের বাজিমাত 

বাণিজ্যিকভাবে টমেটো, তরমুজ এবং শসা চাষ করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছেন পঞ্চগড়ের তরুণ কৃষক আব্দুর রউফ। ইতোমধ্যে তিনি টমেটো ও শসা বিক্রি শুরু করেছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তরমুজও বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। 

আব্দুর রউফের বাড়ি সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামে। তিনি সেখানকার রফিকুল ইসলামের ছেলে এবং ঠাকুরগাঁও সরাকারি কলেজের গণিত বিভাগের ছাত্র।

আব্দুর রউফ ২০১২ সালে মাধ্যমিক পাস করলেও কৃষি কাজের সম্পৃক্ত আরও ছোট থেকেই। দৃঢ় মনোবল নিয়ে উদ্যোমী এ তরুণ এবছর বড় পরিসরেই শুরু করেছেন কৃষি কাজ।

চলতি মৌসুমে আব্দুর রউফ অন্যের ৩০ একর জমি বন্ধক নিয়ে স্বপ্ন বুনেছেন। এর মধ্যে ১০ একরে টমেটো, ১৬ একরে তরমুজ এবং তিন একরে শসা চাষ করেছেন। এতে ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন তিনি। 

আব্দুর রউফ জানান, আবাদে ফলন ভালো, তাই বেশ খুশি তিনি। দাম ভালো পেলে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা অনায়াসেই বিক্রি করা যাবে।

তিনি বলেন, ‘এই বৃহৎ শস্য ক্ষেতে ৮০ থেকে ১০০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। গত তিন মাস তথা জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে শ্রমিকেরা কাজ করেছেন। আরও দেড় থেকে দুই মাস কাজ করতে পারবে শ্রমিকেরা।’

জানা গেছে, কৃষি সমৃদ্ধ জেলা পঞ্চগড়ের অর্থকরি ফসল হচ্ছে টমেটো ও তরমুজ। প্রতি বছর এখানকার উৎপাদিত শস্য দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়। টমেটোকে কেন্দ্র করে বাইরের জেলার ব্যবসায়ীরাও ভিড় করেন এখানে। মৌসুম শুরু হবার আগেই কাঁচা টমেটো পাকানো পর্যন্ত ঘরে রাখতে টিনের শেড প্রস্তুত করা হয়। তবে দিন দিন কমে যাচ্ছে তরমুজের আবাদ। অধিক মূলধনেও লাভের মুখ না দেখায় আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকেরা। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ আবাদ হলো তরমুজ। এ অবস্থায় তরুণ কৃষক আব্দুর রউফ ১৬ একর জমিতে তরমুজ চাষ করে বেশ সাহস দেখিয়েছেন। তার বৃহৎ এই কৃষি ক্ষেতে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন বিভিন্ন জনেরা। পরিদর্শনে আসছেন জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক ও কৃষি কর্মকর্তারা। বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতাও করছে কৃষি অফিস।

আব্দুর রউফ জানান, তার কৃষি কাজে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন তার এক বন্ধু। অনুকূল আবহাওয়া এবং ফসলের ভালো দাম পেলেই তার স্বপ্ন পূরণ হবে।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আব্দুর রউফ একজন উদ্যোমী যুবক। এ বয়সী যুবকরা যখন চাকরির পেছনে ছুটে বেড়ায়, তখন আব্দুর রউফ বড় আকারে কৃষি কাজ করছেন। অবশ্যই এটা প্রশংসনীয়। আর চাকরি না করেও যে ভালো কিছু করা যায়, সেটারও দৃষ্টান্ত এটা।’