পজিটিভ বাংলাদেশ

যে পথ ধরে হাঁটলে মেলে প্রশান্তি

পাহাড়, টিলা আর দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ চা-বাগানে বেষ্টিত প্রকৃতি কন্যা সিলেট। এখানে প্রকৃতির যেমন জয় জয়কার, তেমনি অবকাঠামোগত উন্নয়নেও এগিয়ে এই নগরী। নাগরিকদের হাঁটার পথ বা ‘ওয়াকওয়ে’ এক নতুন সংযোজন। চা বাগানের টিলা ঘেঁষে নির্মিত ওয়াকওয়ে ঘুরে দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা। এ যেন এক প্রশান্তির জায়গা।

দীর্ঘ দিন জবরদখলে থাকা বিভিন্ন ছড়া-খাল দখলমুক্ত করে সিলেট সিটি করপোরেশন পানি নিষ্কাশনের পাশাপাশি ছড়া নালার তীরে নির্মাণ করছে নাগরিকদের হাঁটার পথ বা ‘ওয়াকওয়ে’। ইতোমধ্যে নগরীতে বিভিন্ন স্থানে এই ওয়াকওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে ওয়াকওয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে সর্বত্র। সকাল, বিকেল এমনকি রাতেও সময় কাটাতে ভিড় দেখা যায়। ছুটির দিনে ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে এই স্থানটি।

সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, সিলেট নগরীতে সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সিসিকের। এরআগে নগরীর মধ্যদিয়ে বয়ে চলা ১২টি ছড়া-খাল দখলমুক্ত করে সিসিক। এরপর দখলমুক্ত অংশে প্রাথমিকভাবে নগরীর দর্শনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ চারটি স্থানে ওয়াকওয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলমান এই প্রকল্পে টিলাগড় এলাকার হাতিম আলী উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন হলদিছড়ায় ১ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, একই ছড়ায় নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকায় ১ কিলোমিটার, দাড়িয়াপাড়া এলাকায় মুগনিছড়ায় ৩০ মিটার, নগরীর উত্তর-পূর্ব দিকে শাহী ঈদগাহ, টিবি গেট ও এমসি কলেজ এলাকার গোয়ালীছড়ায় ৩৫ মিটার, গোয়াবাড়ি-করেরপাড়া এলাকায় কালীবাড়ি ছড়ায় দেড় কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। ওয়াকওয়ের সঙ্গে ছড়া-খালের প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণসহ এই প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোয়াবাড়ি-করেরপাড়া এলাকায় কালীবাড়ি ছড়ায় দেড় কিলোমিটারের ওয়াকওয়ে নির্মাণ অনেকটা শেষের পথে। কিছু অংশ আগেই দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বাকী অংশের কাজ চলছে। এই ওয়াকওয়েতে সকাল-বিকেল এমনকি রাতেও দাঁড়িয়ে প্রকৃতিকে উপভোগ করেন নগরবাসী।

সকালে ওয়াকওয়ে ধরে হাটঁতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা জাবেদ আহমদ বলেন, ‌‘মূলত হাঁটার জন্য এই ওয়াকওয়ে। তবে নগরবাসী এটাকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গ্রহণ করেছে। ছুটির দিনে পর্যটনকেন্দ্রের মতো ভিড় হয় এখানে। আমি এখানে হাটঁতে আসা লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করি।’

  সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ওয়াকওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজ অনেক আগে শুরু হয়েছে। প্রত্যেকটির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।  করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে অনেক প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সবকটা ওয়াকওয়ে উন্মুক্ত করে দেবো।’