পজিটিভ বাংলাদেশ

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, রমজানের বালতি জীবনের অবসান 

রাইজিংবিডিতে ‌‘৬ বছর ধরে রমজানের হাসি-কান্নার সঙ্গী বালতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর হুইল চেয়ার পেলো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু রমজান।

সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে উপজেলা প্রশাসনিক ভবনে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র, কিশোরগঞ্জের সহায়তায় একটি হুইল চেয়ার উপহার দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল শিশুটিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। সেখানে ৬ বছর ধরে রমজানের সংগ্রামী জীবনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরে পোর্টালটি। হুইল চেয়ারের অভাবে ছেলের এমন কষ্টের জীবনের কথা জানিয়ে আকুতি করেছিলেন শিশুর মা। দারিদ্র্যতার কারণে বার বার চেষ্টা করেও নিজ অর্থে একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য হয়নি রমজানের বাবার।

পরে সংবাদটি সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হলে সমাজের সচেতন মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। অবশেষে রাইজিংবিডির খবরটি নজরে আসে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) রাবেয়া পারভেজের। সংবাদের বিস্তারিত দেখে রমজানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি হুইল চেয়ারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন উপজেলা প্রশাসন। এরইমধ্যে হুইল চেয়ার দেওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান ইউএনও রাবেয়া পারভেজ। 

আজ (১১ এপ্রিল) রমজানের সেই প্রতীক্ষিত বালতির জীবনের অবসান ঘটেছে। হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিশিয়াল ফেসবুকে এক পোস্টে ইউএনও রাবেয়া পারভেজ লেখেন, আর নয় বালতির জীবন। আজ বাক্প্রতিবন্ধী রমজানকে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র, কিশোরগঞ্জের সহায়তায় একটি হুইল চেয়ার প্রদান করা হয়েছে। রমজানের বাবা অটোরিকশা চালান। তিনি হুইল চেয়ারের জন্য কখনো আবেদন করেননি। রমজানকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে সাথে সাথে তাকে হুইল চেয়ার দেওয়ার উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়। আজ তার পরিবারের কাছে তা হস্তান্তর করা হলো। ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধীদের সেবায় হোসেনপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সার্বক্ষণিক তৎপর আছেন৷ তাই যেকোনো সেবা নিতে সমাজ সেবা অফিসে যোগাযোগ করুন। অথবা উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করুন। 

এদিকে রমজানের ৬ বছরের এমন কষ্টের জীবনের অবসান হওয়ায় অনেকটা আনন্দ এসেছে তার পরিবারে। রমজানের বাবা দুদু মিয়া বলেন, ইউএনও আপাকে অনেক ধন্যবাদ। আমার সামর্থ্য ছিল না ছেলেকে একটি হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার কিন্তু ছেলের এমন কষ্ট দেখে খুব খারাপ লাগতো। এখন আমার ছেলের কষ্ট একটু হলেও কমবে।

হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) রাবেয়া পারভেজ বলেন, রাইজিংবিডির খবরটি দেখার সাথে সাথে রমজানের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে আশ্বাস দিয়েছিলাম, আজ তার পরিবারের কাছে একটি হুইল চেয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সংবাদ লেখক: শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।