পজিটিভ বাংলাদেশ

সখীপুরে তরমুজ চাষে সফল একই গ্রামের দুই কৃষক

টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলায় তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন একই গ্রামের দুজন কৃষক। রোগ-বালাই কম হওয়ায় ও স্বল্প খরচে ভালো ফলনের মাধ্যমে লাভবান হয়েছেন তারা। রমজান উপলক্ষে বর্তমানে বাজারে তরমুজের বেশ চাহিদা রয়েছে। তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও সুস্বাদু। তাদের এমন সফলতা দেখে অন্য কৃষকদের মাঝে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এ অঞ্চলে তরমুজ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের বোয়ালী গ্রামে বোয়ালী ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক এস এম শফিকুল ইসলাম তার এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ আবাদ করেন। অল্প খরচে মাত্র ৭০ দিনে তার জমিতে ফলন আসতে শুরু করে। ইতোমধ্যে একেকটি তরমুজের ওজন ৪ থেকে ৬ কেজি হয়ে উঠেছে। তরমুজগুলো পাকতেও শুরু করেছে।

শফিকুল ইসলাম জানান, একসময় তিনি ওই জমিতে ধান চাষ করতেন। তবে এবছর তিনি ওই জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করেন। এই এলাকায় তরমুজের আবাদ নতুন হওয়ায় প্রথমে তিনি ভয় পেয়েছিলেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং বাজারে তরমুজের বাজারমূল্য ভালো থাকায় তার সে ভয় কেটে গেছে। মাত্র ৮০ দিনের মাথায় সফলতা পান তিনি। তার বাগানের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে। ওই জমি থেকে তিনি এবছর প্রায় ১ লাখ ৬০ হজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলেও তিনি জানান।

এদিকে একই গ্রামের কৃষক মানিক আল মামুনও তরমুজ চাষে সফলতা দেখিয়েছেন। মানিক আল মামুন বলেন, এবার আমি মালচিং পদ্ধতিতে দুই বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করি। আমার জমিতে পাকিজা, ড্রাগন কিং, ব্ল্যাক হিরো ও লেনফাই জাতের তরমুজ রয়েছে। ইতোমধ্যে আট শতাধিক গাছে তরমুজ ধরেছে। তরমুজ বিক্রিও শুরু করেছি। 

উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা জমি থেকেই পছন্দমতো তরমুজ কিনে খুশি মনে বাড়ি ফিরছেন। আশা করছি খরচের তুলনায় দ্বিগুণ লাভবান হবো। ইতোমধ্যে আমার এই তরমুজ চাষ দেখে অনেক কৃষক পরামর্শ নিতে আসছেন। আমি তাদের মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের সুবিধা সম্পর্কে জানিয়েছি। আগামীতে আরও ব্যাপকভাবে তরমুজ চাষ করবো, বলেন তিনি।

স্থানীয় কৃষক তাহেরুল ইসলাম ও আজাহার আলী বলেন, তরমুজ চাষ কম খরচে ও কম পরিশ্রমে এত ভালো লাভজনক আগে জানতাম না। আগামীতে ব্যাপকভাবে তরমুজ চাষ করবো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিয়ন্তা বর্মন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তরমুজের বাম্পার ফলনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। লাভজনক হওয়ায় আগামীতে এ অঞ্চলে আরও বেশি পরিমাণে তরমুজের চাষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারা চাষিদের পাশে রয়েছে। কৃষক তাদের উচ্চমূল্যের ফসল যাতে লাভজনক অবস্থায় নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে পারে, সেজন্য কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা।