পজিটিভ বাংলাদেশ

পাখিপ্রেমী মহিউদ্দিন

ভোলার লালমোহনে পাখির প্রতি ভালোবাসার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পাখিপ্রেমী মহিউদ্দিন। প্রতিদিন নিদিষ্ট সময়ে পাখি ছুটে আসে তার কাছে। তখন তিনি স্নেহ-ভালোবাসায় খাবার তুলে দেন ক্ষুদার্থ পাখিদের। টানা ১০ বছর ধরে কয়েক শতাধিক শালিক পাখির একটি ঝাককে খাবার দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ যেন মানুষ আর পাখির মধ্যে গড়ে ওঠা অনন্ত প্রেম।

মহিউদ্দিনের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়ন ইলিশাকান্দি গ্রামে। এ গ্রামের সৈনিক বাজারে চায়ের দোকান রয়েছে তার। নিজের উপার্জিত টাকার একটি অংশ থেকে গত ১০ বছর ধরে পাখিদের খাবার খাওয়াচ্ছেন তিনি। 

মহিউদ্দিনের সঙ্গে শালিক দলের এমন ভালোবাসা দেখলে মনে হতে পারে পাখিগুলো যেন তার পোষ মানানো। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। খাবার বিতরণ করলেই ছুটে আসে শালিকের ঝাক। তাও আবার একটি দুটি নয়, আসে কয়েক'শ পাখি।

মহিউদ্দিন খুব ভোরে এসে নিজের দোকান খোলেন। সেখান থেকে রুটি, বিস্কুট এবং মুড়ি ছিটিয়ে দেওয়া মাত্রই চলে আসে পাখির ঝাক। ভালোবাসার পরশ পেয়ে পাখিগুলো নির্ভয়ে সেই খাবাগুলো গ্রহণ করে আবার চলে যায়। দেখলে মনে হবে পাখিগুলো মহিউদ্দিনের বেশ পরিচিত এবং আপন। পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এমন কাজ করছেন বলে জানালেন মহিউদ্দিন।

পাখিপ্রেমী মহিউদ্দিন বলেন, ‘শুরুতে ৫০-৬০টি পাখি খাবার খেতে আসতো। এখন আসে ৩৫০ থেকে ৪০০ পাখি। আমি পাখিগুলোকে খাবার দেই, খুব ভালো লাগে। পাখিগুলোকে আমি আমার সন্তানের মতো করে ভালোবাসি। যতদিন পারবো ওদের খাবার তুলে দিবো।’

মহিউদ্দিনের সঙ্গে শালিকদের এমন সখ্যতা এলাকাবাসীর ও চায়ের দোকানে আসা ক্রেতাদেরও মন কেড়েছে। তারা এমন ভালোবাসার প্রশংসা করেন। এছাড়া পাখিদের খাবার খাওয়ানোর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে ছুটে সৈনিক বাজারে ছুটে আসেন অনেকেই।

মহিউদ্দিনের মতো সবাইকে পাখিদের প্রতি ভালোবাসার আহব্বান জানিয়ে ন্যাচার কনজারভেশন কমিটি (এনসিসি) ভোলা সমন্বয়কারী জসিম জনি বলেন, ‘বনাঞ্চলে নির্বচারে গাছ কাটাসহ নানা কারণে দেশি পাখি এখন প্রায় বিলুপ্তির দিকে। পাখিদের অবাদ বিচরণ নিশ্চিত করা জরুরি। পাখিপ্রেমী মহিউদ্দিনেন মতো সমাজের প্রত্যেক মানুষের উচিত পাখিদের ভালোবাসা।’