পজিটিভ বাংলাদেশ

উচ্চ ফলনশীল বেগুন চাষে লাভবান কৃষক

মাত্র চার শতক জমিতে করা হয়েছে বেগুন চাষ, আর এতেই কৃষকের আয় ৪০ হাজার টাকা। প্রাথমিকভাবে জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বেগুন চাষ করে এমন সাফল্যে খুশি প্রদীপ কুমার মিন্টু। তিনি ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে বারী—১২ জাতের এই বেগুন চাষ করতে চান। তার উৎপাদিত একেকটি বেগুনের ওজন প্রায় এক কেজি। ফলনও বেশ ভালো। এর জন্য তিনি অন্যান্য সবজির সাথে বেগুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।  

কৃষক প্রদীপ কুমার মিন্টুর বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাটের আলীরগাঁও ইউনিয়নের আলীরগ্রামে। বাড়ির কাছে পিরিজপুর—সোনারহাট সড়কের পূর্ব পাশে নেটের বেড়া দেওয়া কয়েক বিঘা জমি রয়েছে তার। এতে ফলানো আছে শিম, লাউ, টমেটো কাঁচা মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ধনেপাতাসহ শীতকালীন নানা শাক-সবজি। এর মধ্যে মালচিং পেপার দিয়ে গাছের গোঁড়া ভরাট করে ১০ শতক জমিতে টমেটো ও ৪ শতক জমিতে ফলানো হয়েছে বারী—১২ জাতের উচ্চ ফলনশীল জাতের বেগুন। অন্যান্য সবজির সাথে সেই বেগুনই সবার মন কেড়েছে।

সবুজ এসব বেগুন দেখতে অত্যন্ত সুন্দর ও ওজনে এক একটি প্রায় ১ কেজি। সুস্বাদু এই জাতের বেগুন গাছগুলো নুয়ে পড়েছে বেগুনের ওজনের কারণে। মাত্র ৪ শতক জমিতে বারী—১২ জাতের বেগুন চাষ করে বাজিমাত করেছেন আলীর গ্রামের এই কৃষক। উর্বর মাটি এবং সঠিক পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা বারী বেগুনের গাছগুলোতে প্রচুর ফলনও হয়েছে। প্রতিটি গাছেই ৬—৭টি এসব বড় বড় বেগুন ধরে মাটি পর্যন্ত ঝুলে রয়েছে।

কৃষক প্রদীপ কুমার মিন্টু জানান, ইউটিউবে বারী—১২ জাতের বেগুনের চাষাবাদ, ফলনসহ লাভজনক দিক দেখেন। অনেকটা শখের বসে তিনি এ বেগুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। বারী—১২ জাতের বেগুন বীজ সংগ্রহে সিলেটে তার এক বন্ধুর সহযোগিতা নেন। ওই বন্ধুর সহযোগিতায় ও উপজেলা কৃষি অফিসের উপ—সহকারী কৃষি অফিসার খোয়াজ হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে গড়ে তোলা হয় এ বেগুন শেড। বিগত এক মাস থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৪০ টাকা দরে তার উৎপাদিত বেগুন বিক্রি থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় এসেছে। ভবিষ্যতে বেগুন বীজ সংগ্রহ ব্যবসার জন্য বারী—১২ জাতের বেগুন বেশি চাষাবাদ করবেন বলে জানান তিনি।

গোয়াইনঘাটের উপ—সহকারী কৃষি অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন শাক সবজিসহ রবিশস্য খুবই ভালো হয়েছে।  মাটি উর্বর থাকায় ফলনও ভালো হয়ে থাকে। বারী—১২ জাতের বেগুন চাষ লাভজনক, পোকার আক্রমণ কম এবং ক্ষতি সাধিত হয়ে থাকে। বারী—১২ জাতের বেগুন চাষে কৃষক মিন্টুকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, কৃষক মিন্টুর সাফল্য একটি ইতিবাচক সংবাদ। গোটা উপজেলার কৃষির জন্য একটি ভালো খবর। এতে অন্যান্য কৃষকরাও উৎসাহী হবেন। ফসল উৎপাদন ও কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতায় গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সেবার মানসিকতা নিয়ে পাশে থাকবে বলে তিনি জানান।