পজিটিভ বাংলাদেশ

হাড়িডাঙ্গা বিলে শসার ব্যাপক ফলন

নড়াইলের সদর উপজেলার হাড়িডাঙ্গা বিলে ঢুকতেই চোখে পড়বে বড় বড় মাছের ঘের। ঘের পাড়ে বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। সেই মাচায় ঝুলছে কচি কচি শসা। 

শুধু হাড়িডাঙ্গা বিলই নয়- এমন কি আগদিয়ারচর, বিছালী, খলিশাখালী, মির্জাপুর, নলদিরচরসহ পাশপাশের গ্রামের দুই হাজারের ও বেশি কৃষক ঘেরের পাড়ে শসা চাষ করেছেন। 

স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভের আশায় শসা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে জেলার হাজারো কৃষক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময় মতো বীজ ও সার প্রয়োগ করায় এ বছর শসার ব্যাপক ফলন হয়েছে। শসার মান ভাল হাওয়ায় বাজারে চাহিদাও বেশি। তবে অভিযোগ রয়েছে বাজারে সিন্ডিকেট কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।

নড়াইল কৃষি অফিস জানিয়েছে, জেলায় এ মৌসুমে ২০২ হেক্টর জমিতে শসার চাষ হয়েছে। সদর উপজেলায় ১০৫, কালিয়া উপজোয় ৭৫ এবং লোহাগড়া উপজেলায় ২২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বিভিন্ন জাতের শসা। এ বছর জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৬৩৫ মেট্রিকটন।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে সরেজমিনে হাড়িভাঙ্গা বিলে কৃষক দীপংকর বিশ্বাসের ঘের পাড়ে গিয়ে দেখা যায় শসার লতায় থরে থরে শসার ফলে রয়েছে।

তিনি বলেন, “দুই বিঘা জমিতে ঘের কেটে মাছ চাষ করেছি। এ বছর ঘেরের পাড়ে শসার চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছি। কয়েক দিন ধরে ৭০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করেছি। আশা আছে এ মৌসুমে দুই লাখ টাকার শসা বিক্রি করতে পারব। শসার পাইকারি দাম যদি কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয় তাহলে আমরা লাভবান হতে পারব।”

ঘেরের পাড়ে মাচায় ঝুলছে কচি শসা

অপর চাষি মনোজ সাহা বলেন, “বর্নি বাজারে শসা পাইকারি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় শসার পাইকারি বাজার।”

কৃষকরা কেউ ভ্যানে, কেউ নসিমন আবার কেউবা অটোরিকশায় করে শসা নিয়ে আসেন বর্নি বাজারে। জেলা শহরের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, ফরিদপুর, মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলায় চলে যায় এ অঞ্চলের শসা। 

নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, “এ এলাকায় ঘের পাড়ে শসার চাষ দিন দিন বাড়ছে। চলতি বছর ঘের পাড়ে যে শসা উৎপাদন হয়েছে তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলাগুলোতেও যাচ্ছে। ঘের পাড়ে কৃষকদের শসা চাষে কৃষি বিভাগ সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।”

তিনি আরো বলেন, ‘‘কৃষকদের অভিযোগ, বর্নি বাজারে ব্যাপারীদের সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। যেন কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পান।”