দেহঘড়ি

ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায়

ঝুমকি বসু : ইউরিক অ্যাসিড। রক্তে এটি বাড়ার কারণে দেখা দিতে পারে শরীরে নানা উপসর্গ। যার ফলে হতে পারে মারাত্মক সমস্যা। গাঁটে গাঁটে ব্যথা, কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যার মতো নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে শরীরে। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এম.এ. আজহারের সঙ্গে। তিনি জানান এ রোগের বিস্তারিত। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কেন বাড়ে

* বংশগত কারণে।

* অতিরিক্ত ওজন।

* মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল পান।

* চাহিদার তুলনায় প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেলে।

* পিউরিনযুক্ত খাবার (লাল মাংস, কলিজা, ইস্টের তৈরি খাবার, পালং শাক, মাশরুম, ওটমিল, ফুলকপি, মুসুরির দাল, মটরশুঁটি ইত্যাদি)।

* প্রক্রিয়াজাত খাবার, কোমল পানীয় পান।

* এছাড়া লিভার যদি পর্যাপ্ত ইউরিক অ্যাসিড না তৈরি করতে পারে কিংবা কিডনি যদি ইউরিক অ্যাসিড না বের করতে পারে সেটাও এ জটিলতার অন্যতম কারণ।

* বাতের সমস্যা, ‍হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা থাকলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ

* গাঁটে ব্যথা হতে পারে। এক্ষেত্রে পায়ের বুড়ো আঙুল, হাঁটু, পায়ের পাতা, কবজি, হাতের গাঁটে অসহ্য ব্যথা হয়। সাধারণত এই ব্যথা ৫-১০ দিন একটানা চলে।

* ঘন ঘন জ্বর আসতে পারে।

* শরীরে অস্বাভাবিক ঘাম হয়।

* পেট এবং কোমরে খুব ব্যথা হয়।

* কখনো কখনো সারা শরীরে কাঁপুনি দেখা দেয়।

* কিডনির সমস্যা হতে পারে।

* পিঠে ব্যথা করতে পারে।

* প্রস্রাব করার সময় সমস্যা হতে পারে।

 

ইউরিক অ্যাসিডের পরীক্ষা

রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষা করতে হয়। ইউরিক অ্যাসিড সমস্যায় যা খাবেন, যা খাবেন না

* পিউরিনযুক্ত খাবার কম খান।

* দুধের তৈরি খাবার খুব উপকারী।

* মুরগির মাংস, কুসুম ছাড়া ডিম খেতে পারেন।

* প্রচুর পানি এবং তরল খাবার খাবেন। ফলের রস, হারবাল চা খুব উপকারী।

* আপেল, কলা, আনারস, লেবু ইত্যাদি ফল খাবেন।

* ভিটামিন সি যুক্ত খাবার এবং সয়াবিন খেতে পারেন।

* বেশি আঁশযুক্ত খাবার যেমন সবজি, শাক খাবেন।

* লাল মাংস, চিংড়ি মাছ এবং সামুদ্রিক মাছ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়। তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন।

* খাদ্যতালিকা থেকে সব রকমের ডাল পরিহার করুন।

* ফুলকপি, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, পাকা টমেটো, মটরশুঁটি, মাশরুম, অ্যাসপারাগাস, পালংশাকে ইউরিক অ্যাসিড থাকে। এসব খাবার বর্জন করুন।

* অ্যালকোহল বর্জন করুন।  

পরামর্শ

* শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন।

* স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট মেনে চলুন।

* নিয়মিত হাঁটা প্রয়োজন।

* যেকোনো কায়িক পরিশ্রমের পর বেশি করে পানি পান করুন।

* ৩ মাস পর পর লিপিড প্রোফাইল চেক করুন। কারণ যাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকে, তাদের হাই কোলেস্টেরলের প্রবণতা থাকে।

* চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন। চিকিৎসা চলাকালে কোনো অবস্থাতেই ওষুধ বাদ দেওয়া যাবে না।  

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ আগস্ট ২০১৭/ফিরোজ