দেহঘড়ি

মূত্রথলিতে জন্ম নিরোধক ডিভাইস

এস এম গল্প ইকবাল: বছরজুড়ে কত ঘটনাই না ঘটে। অনেক ঘটনা এতটাই আমাদের অবাক করে যে, সেগুলো অনেকদিন মনে থাকে। বিশেষ করে সেগুলো যদি মেডিকেল সায়েন্স বিষয়ক হয় তাহলে তো কথাই নেই। এগুলো চিকিৎসকদের বিরল রোগ সম্পর্কে জানতে কিংবা প্রচলিত রোগের অস্বাভাবিক লক্ষণসমূহ নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। ২০১৭ সালের অদ্ভুত কিছু ঘটনা নিয়ে এ প্রতিবেদনের পড়ুন চতুর্থ পর্ব। ব্লাডার স্টোন বা মূত্রথলির পাথর হচ্ছে, পুঞ্জীভূত মিনারেল যার আকার মাইক্রোস্কোপিক রেঞ্জ থেকে ডায়ামিটারে এক ইঞ্চি বা তার বেশি হতে পারে। কিন্তু এর বেশি হলে অবাক হতে হয় বৈকি! এ বছর ক্যালিফোর্নিয়ার এক ব্যক্তির মূত্রথলিতে একটি ব্যতিক্রমধর্মী বৃহৎ পাথর পাওয়া যায়, যার আকার প্রায় উটপাখির ডিমের মতো। এটি ছিল ৪.৭ ইঞ্চি বাই ৩.৭ ইঞ্চি। ওজন ৭৭০ গ্রাম। এক দশকেরও বেশি আগে লোকটির ব্লাডার অপসারণ করা হয়। সার্জারির সময় ডাক্তাররা একটি ‘নিওব্লাডার’ সৃষ্টি করতে লোকটির অন্ত্রের অংশ ব্যবহার করেন। নিওব্লাডার রিপ্লেসমেন্ট ব্লাডার হিসেবে কাজ করতে পারে। কিন্তু এটি মূত্রথলিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়ায়। এখানেও তাই হয়েছে। অবশেষে তাকে পুনেরায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়।  এই প্রতিবেদনটি এ বছর ৬ সেপ্টেম্বর ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয়। মূত্রথলির আরেকটি ঘটনা এ বছর বেশ আলোচনায় এসেছে। প্রেগন্যান্সি প্রতিরোধের জন্য ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইস (আইইউডি) সাধারণত নিরাপদ এবং কার্যকর পদ্ধতি। কিন্তু চীনে এক নারীর জরায়ু থেকে মূত্রথলিতে একটি আইইউডি স্থানান্তর করা হয়। ২৬ বছর বয়স্ক এ নারী মূত্রথলির সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে যান। চিকিৎসকরা তার পেলভিসের এক্স-রে নেন এবং দেখেন মূত্রথলিতে একটি আইইউডি রয়েছে। এটি ছয় মাস আগে ফিট করা হয়। কিন্তু যন্ত্রটি কাজ না করায় তিনি প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়েন। ওদিকে বাচ্চা ডেলিভারির সময় চিকিৎসকরা  তার শরীরে আইইউডি’র কোনো চিহ্ন দেখেননি। জার্নাল মেডিসিনের গত অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, রোগীর ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইসটি জরায়ুর প্রাচীরের মধ্য দিয়ে পেলভিক ক্যাভিটিতে চলে যায় এবং সেখান থেকে মূত্রথলিতে চলে যায়। পরবর্তী সময়ে একটি পদ্ধতির মাধ্যমে তার মূত্রথলি থেকে ডিভাইসটি অপসারণ করা হয়। আইইউডি ব্যবহারের পরও প্রেগন্যান্সির আশঙ্কা বিরল ঘটনা। অথচ এমন ঘটনাই এ বছর ঘটেছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ডিসেম্বর ২০১৭/ফিরোজ/তারা