দেহঘড়ি

নতুন বছরে সুস্থ থাকার সহজ উপায় (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল : দেখতে দেখতে, হাসতে হাসতে কিংবা ভুগতে ভুগতে একটি বছর কেটে গেল। অনেকেই সুখে-শান্তিতে বা সুস্বাস্থ্যে কাটিয়ে দিলেও এই একটি বছরে আমাদের কেউ কেউ স্বাস্থ্যসংক্রান্ত জটিলতায় ভুগেছি। নতুন বছরেও এমন স্বাস্থ্য সমস্যা নিশ্চয়ই কারো কাম্য নয়। ২০১৮ সালে অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা এড়াতে এ প্রতিবেদনের উপায়গুলো মেনে চলতে পারেন। * ঝুঁকিপূর্ণ উপাদানের পণ্য পরিহার করুন

প্রয়োজনে আপনার পরিষ্করণ সামগ্রী, প্রসাধন সামগ্রী বা কসমেটিকস সামগ্রী পরিবর্তন করুন। আপনার প্রোডাক্টের লেবেল মিলিয়ে দেখুন যাতে বোঝা যায় যে, কোন প্রোডাক্টটি পরিহার করা যায়, অথবা থিংক ডার্টি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন- যে প্রোডাক্টটি কিনতে চান তার বারকোড স্ক্যান করুন এবং এটি আপনাকে বলে দেবে যে কোন প্রোডাক্টটিতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির উপাদান আছে। * হাত পরিষ্কার রাখুন

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণা অনুসারে, সেসব ১০ শতাংশ আমেরিকানদের মতো হবেন না যারা বাথরুম ব্যবহার করে হাত ধৌত করেন না। গবেষণায় আরো পাওয়া যে, কেবলমাত্র ৫ শতাংশ আমেরিকান ইনফেকশন-সৃষ্টিকারী জীবাণু হত্যা করতে দীর্ঘসময় তাদের হাত ধোয়। বাথরুম ব্যবহার করে, পাবলিক প্লেস থেকে এসে কিংবা অন্যান্য নোংরা কাজ করলে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। * প্রাকৃতিক এয়ার ফ্রেশেনার তৈরি করুন

গবেষণায় দেখা যায় যে, বাণিজ্যিক এয়ার ফ্রেশনারে (যেমন- ক্যান্ডেল, প্লাগ-ইন, ইনসেন্স) বিষাক্ত উপাদান রয়েছে যা অন্তঃস্রাব ব্যাহতকারী। একটি ডিফিউজারে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল ঢালুন, জানালা খুলুন অথবা অন্যান্য হোমমেইড এয়ার ফ্রেশেনার তৈরি করুন। * মেডিটেশন করুন

ডা. জিন্ডারসিক বলেন, ‘গবেষণায় পাওয়া যায় যে, নিয়মিত মেডিটেশনের বড় উপকারিতা থাকতে পারে।’ এটি স্ট্রেস ও ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং বুদ্ধিকে শাণিত করতে পারে। আপনি মেডিটেশন চর্চায় নতুন হলে মেডিটেশন ভিডিও, অনলাইন কিংবা স্মার্টফোন অ্যাপের মাধ্যমে শুরু করতে পারেন। * খালি পায়ে ঘরে প্রবেশ করুন

গবেষণায় আবিষ্কার হয় যে, জুতার সোল প্রচুর পরিমাণে ইনফেকশন-সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া আশ্রয় দিয়ে থাকে, যেমন- ক্লস্ট্রিডিয়াম ডিফিসাইল-এটি সহজে চিকিৎসা অযোগ্য একটি জীবাণু যা ডায়রিয়া এবং অন্যান্য জিআই উপসর্গ সৃষ্টি করে। ঘরের ভেতর জীবাণুর ট্র্যাকিং বা প্রবেশ ঠেকাতে ঘরে প্রবেশের আগে জুতা খুলে ফেলুন। শো-র‍্যাক বা প্রবেশপথের ম্যাটে জুতা রাখুন। * কীটনাশকমুক্ত ফল ও শাকসবজি কিনুন

কোন কোন ফল ও শাকসবজিতে উচ্চমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তা নিশ্চিত হয়ে জেনে নিন। যথাসম্ভব কীটনাশকমুক্ত ফল ও শাকসবজি বা অর্গানিক ফুড ক্রয় করুন। * পানি পর্যবেক্ষণ করুন

আপনি কি জানেন আপনার ট্যাপের পানিতে কি আছে? আপনার ওয়াটার ফিল্টার ব্যবহার করা উচিত, কারণ ওয়াটার ফিল্টার ব্যবহার না করলে কিছু দূষণকারী উপাদান ক্যানসার, ব্রেইন বা নার্ভাস সিস্টেম ড্যামেজ, উর্বরতার সমস্যা কিংবা হরমোন উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। আপনার ট্যাপের পানি নোংরা দেখালে সর্বোত্তম উপায়ে ফিল্টার করা উচিত। * খাবারে মনোযোগ দিন

এখানে সেখানে অসচেতনভাবে খাবার না খেয়ে কিচেন বা ডাইনিং রুমে খাবার খান। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডিস্ট্র্যাক্টেড ইটিং বা অন্যকিছুতে মনোযোগ দিয়ে ভোজন (যেমন- টেলিভিশন দেখতে দেখতে খাওয়া) অতিভোজনের দিকে চালিত করে যা ওজন বাড়াতে পারে। * নতুন কিছু জানুন

নতুন জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা অর্জন করুন। নতুন কিছু জানা নিউরোপ্লাস্টিসিটিকে প্রমোট করে, যার মানে হচ্ছে আপনার মস্তিষ্ক নতুন সিন্যাপ্স এবং নিউরাল প্যাথওয়ে সৃষ্টি করে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে এবং অ্যালজেইমার রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। * স্ন্যাকে পরিবর্তন আনুন

কাউন্টারের ওপর বাটিতে ফল রাখুন অথবা গ্লাস জার বা ক্যানিস্টারে অলবণাক্ত মিশ্রিত বাদাম রাখুন- এটি আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যে আপনার কাবার্ডে কুকিজ বা বিস্কুট অনুসন্ধান করার পরিবর্তে এসব ফাইবার ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। ডা. মুর বলেন, ‘এগুলো শরীরে পুষ্টি জোগাবে এবং আপনি আরো পরিতৃপ্তি অনুভব করবেন।’ চিপস বা ক্যান্ডির মতো অস্বাস্থ্যকর আইটেমের মজুদ না রাখাই ভালো, কারণ এসবের মধ্যে শুধুমাত্র উচ্চমাত্রায় ক্যালরি, ফ্যাট, সুগার ও সল্ট থাকে তা নয়, প্রায়ক্ষেত্রে প্রিজার্ভেটিভ ও অন্যান্য অ্যাডিটিভ থাকে যা সময়ের স্রোতে আপনার শরীরের ক্ষতি করতে পারে। পড়ুন : নতুন বছরে সুস্থ থাকার সহজ উপায় (প্রথম পর্ব) তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ