দেহঘড়ি

ডিহাইড্রেশন সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়

আহমেদ শরীফ : গরমের তীব্রতা দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। এ অবস্থায় শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দেয়। কারণ প্রচন্ড গরমে শরীর থেকে পানি ও মিনারেল লবণ বের হয়ে যায় দ্রুত। তাই পানিস্বল্পতা দূর করেত শিগগিরই পদক্ষেপ না নিলে তা হতে পারে খুব ক্ষতিকর। ডিহাইড্রেশন কি?: প্রচন্ড গরমে ঘাম, প্রস্রাব, মল এসবের সঙ্গে শরীর থেকে দ্রুত পানি ও লবণ বেরিয়ে গেলে ডিহাইড্রেশন বা পানিস্বল্পতা সৃষ্টি হয়। এই ডিহাইড্রেশনের কারণে কিডনি, মস্তিষ্ক, লিভার, পাকস্থলী, ফুসফুসের মতো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এর ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ : যেসব লক্ষণে আপনার ডিহাইড্রেশন বা পানিস্বল্পতা হয়েছে বুঝবেন- * ঘুম ঘুম ভাব * গলা শুকিয়ে যাওয়া * প্রস্রাব কম হওয়া * ক্লান্তি * মাথাব্যথা * তৃষ্ণাবোধ * মাথা ঝিম ঝিম করা * দুর্বলতা * মাংসপেশির দুর্বলতা * কোষ্ঠকাঠিন্য ঘরোয়াভাবে পানিস্বল্পতা দূর করার উপায় পানি: যেহেতু শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দিয়েছে, তাই প্রতিদিন নিয়মিত বিরতিতে পানি পান করলে ডিহাইড্রেশন দূর হবে। গ্রীষ্মের তীব্র গরমে যেহেতু শরীর থেকে পানি দ্রুত বের হয়ে যায়, তাই এ সময় একটু বেশি পান করাই ভালো। এ কারণে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য ঠিক থাকে। আপনার শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক আছে, তা বোঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো- প্রস্রাবের রং কেমন আছে তা দেখা। যদি প্রস্রাব হলুদাভ হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে পানিস্বল্পতার সৃষ্টি হয়েছে। * লেবু পানি : প্রচন্ড গরমে লেবু পানি খুব উপকারী এক পানীয়। লেবু পানি শরীরের পানির ঘাটতি ও শরীর থেকে চলে যাওয়া মিনারেল ঘাটতিও মেটায়। এক গ্লাস পানিতে অর্ধেকটা লেবু চিপে তাতে মধু মিশিয়ে পান করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। * ডাবের পানি : ডিহাইড্রেশন দূর করতে ডাবের পানি বেশ উপকারী। এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরের মিনারেল ঘাটতিও দ্রুত মেটায়। * বার্লি পানি : বার্লি মেশানো পানি পান করলে ডিহাইড্রেশন সমস্যা দূর হয়। কারণ বার্লিতে প্রচুর ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এতে ফোলেট, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এসব থাকে। বার্লি মেশানো পানি আপনার শরীরও ঠান্ডা রাখবে। এক্ষেত্রে ৩/৪ কাপ পানির সঙ্গে এক কাপ বার্লি মেশাতে হবে। এরপর ওই মিশ্রণ ৪০-৫০ মিনিট ফুটাতে হবে। এরপর পানি ছেঁকে নিতে হবে। পরে সেই পানি ঠান্ডা করে মধু মিশিয়ে পান করতে হবে। * হারবাল চা : ক্যামোমাইল, রোইবস, হিবিসকাস ও রোজের মতো ক্যাফেইনবিহীন হারবাল চা শরীরের পানিস্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে। এসব হারবাল চা নার্ভাস সিস্টেমকে রিলাক্স রাখে ও মনকে করে সতেজ। * অ্যালোভেরা জুস : প্রচুর পানি থাকে অ্যালাভেরাতে। তাই অ্যালোভেরা জুস পান করলে ডিহাইড্রেশন সমস্যা দূর হয়। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতেও সাহায্য করে এই জুস। ব্লেন্ডারে দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল ও এক কাপ পানি নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে পান করতে হবে। * পিকল জুস : প্রচুর সোডিয়াম থাকে পিকল জুসে, পটাশিয়ামও থাকে। তাই ডিহাইড্রেশন দূর করতে এটি বেশ কার্যকর। মাংসপেশির ব্যথা থেকেও নিষ্কৃতি দেয় পিকল জুস। দিনে এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ পিকল জুস পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ মার্চ ২০১৯/ফিরোজ